Atheist Chapter
বেঁচে যাওয়া নারী শ্রমিকদের উপর স্বামীর অত্যাচার এবং অন্য ধরণের মৃত্যুযন্ত্রণা!

বেঁচে যাওয়া নারী শ্রমিকদের উপর স্বামীর অত্যাচার এবং অন্য ধরণের মৃত্যুযন্ত্রণা!

টানা ২১ দিন উদ্ধার কাজ চালানোর পর উদ্ধারকর্মীরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কাজ শেষ করলেন। সেনাবাহিনী, ফায়ার ফাইটার, সিভেল ডিফেন্স এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত যে দলটি উদ্ধার কাজ চালাচ্ছিল তার সঠিক সংখ্যা আমরা জানিনা। সত্যি কথা বলতে কি কেউই জানেন না। কারণ প্রতিদিনই রানা প্লাজার ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত বা মৃত শ্রমিকদের উদ্ধার কাজে নতুন নতুন মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। যারা প্রথম দিকে কাজ শুরু করেছিলেন তারা কেউ কেউ সরে গেলেও সেখানে আরও নতুন কর্মী যোগ দিয়েছিল। এই সাধারণ মানুষদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষার্থী, ব্লগার, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট, রিকসা চালক, ভ্যান চালক, স্কুল-কলেজের তরুণ, ওয়েল্ডিং কর্মী, দোকানদার, কৃষক, মজুর, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী পর্যন্ত। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে এত বড় মনুষ্যসৃষ্ট অপঘাত ঘটেনি। তেমনি এর আগে এত মানুষও কোনো জাতীয় দুর্যোগে এক সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে উদ্ধার কাজে ঝাপিয়ে পড়েনি। সে কারণে সব দিক দিয়েই সাভারের রানা প্লাজার মর্মান্তিক ঘটনাটি এদেশের ইতিহাসে একটি দুর্যোগের ‘মাইলফলক’ হয়ে থাকবে।

এই উদ্ধার পর্বে প্রথম থেকেই সরকারের তরফে বিষয়টিকে ‘খুব একটা মারাত্মক কিছু নয়’ ভেবে ‘ঢিলেমি’ করা হয়েছে। যে বিষয়টি সব চেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে তা হচ্ছে সমন্বয়হীনতা। সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে একাধিক দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারিদের সমন্বয়হীনতা ভীষণভাবে দৃষ্টিকটু লেগেছে। পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে অনেক লেখালিখিও হয়েছে। সরকারের সমালোচনাও হয়েছে। সেই সব সমালোচনার পর অন্যান্য বারের মত সরকারের গাফিলতি আরও প্রকট না হয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংশোধিত হয়েছে। ‘মানুষের জন্য মানুষ’ কথাটিকে এবার সত্যিকার অর্থেই মানুষ প্রমাণ করেছে। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যে মানুষেরা ওই হতভাগ্য মানুষদের বাঁচিয়েছে, পচা-গলা লাশ তুলে এনেছে, সেই সব লাশ সনাক্ত করেছে, সনাক্ত করার পর সেই লাশ তার আত্মিয়র কাছে হস্তান্তর করেছে তা এক কথায় অভূতপূর্ব। সেই সাভারের রানা প্লাজা থেকে জুরাইন কবরস্থান হয়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, মর্গ পর্যন্ত মানুষ মানুষের পাশে থেকেছে। যে মানুষেরা এই মহাকর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেছেন তাদের সবাইকে স্যালুট।

উদ্ধারকাজ চলাকালিন এবং তার পরে আহত-নিহতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দয়ার কাজটিও ‘সরকারি নিয়মে’ হয়েছে। এবং এখনো সেই কাজ চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে যেমন সাহায্য করা হচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও একজন শ্রমিকের ঠিক কত টাকা ক্ষতিপূরণ হওয়া উচিৎ তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে দেন-দরবারও হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র-যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজিএমইএ’র কার্যালয়ের সামনে একাধিকবার প্রতিবাদ-প্রতিরোধও হয়েছে। বিজিএমইএ’র নেতাদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করার চেষ্টাও হয়েছে। যদিও সেই চেষ্টা বিজিএমইএ’র একগুয়েমিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিজিএমইএ মুখে যা যা বলেছে কাজে তা করে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একজন কর্মক্ষম শ্রমিক তার সারা জীবনের কর্মক্ষম সময়ে যত টাকা রোজগার করতেন সেই পরিমান টাকাই তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিৎ, কেননা ওই শ্রমিকটি মারা না গেলে সে তারা পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেন অন্তত আরও কুড়ি থেক ত্রিশ বছর। এই দীর্ঘ শ্রমকালিন সময়ে সে যে পরিমান টাকা রোজগার করতেন তা দিয়ে সেই শ্রমিকটি নিজের এবং তার পরিবারের সকলের ভরণ-পোষণ করতে পারতেন। এখন ওই শ্রমিকটির পরিবারকে নগদ ৫হাজার টাকা বা ১০ হাজার টাকা দিলে হয়ত তাৎক্ষণিকভাবে ওই শ্রমিকটির পরিবার কিছুদিন খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে, কিন্তু তার পর? তার পর কে তাদের অন্ন যোগাবে? এই প্রশ্নের কোনো মীমাংসা হয়নি। যে ‘ভাগ্যবান’ শ্রমিকদের পরিবার টাকা পেয়েছে তারা সব মিলয়ে হয়ত দশ থেকে কুড়ি হাজার টাকার একটা বুঝ পেয়েছে। কিন্তু এমন শত শত শ্রমিক পরিবার আছে যাদের নামটি পর্যন্ত তালিকায় আসেনি। তারা কিভাবে বাঁচবেন? অনেকে যে টাকা পেয়েছেন তার প্রায় সবই হাসপাতালে খরচ হয়ে গেছে। এমন অনেকে আছেন যারা সেই ২৪ এপ্রিল থেকে সাভারের অভয়চন্দ্র স্কুলের মাঠে খোলা আকাশের নিচে প্রায় কুড়ি-একুশ দিন কাটিয়ে যা সঙ্গে করে এনছিলেন তাও শেষ করে ফেলেছেন। অথচ শেষ পর্যন্ত তার প্রিয়জনের লাশটিও পাননি। এটা আসলেই এক জটিল অধ্যায়।

তবে এই আপাতঃ জটিল কাজটিই আরও সহজ এবং কার্যকরভাবে হতে পারত যদি সর্বোচ্চ পর্যায়ে সরকারের কর্মীবাহিনীর কাজের সমন্বয় থাকত। যদি বিজিএমইএ’র মালিকপক্ষ একটু মানবিক হতেন।

তারা যত্রতত্র বলে বেড়ান যে তারা ফ্যাক্টরি না দিলে শ্রমিকরা কী করে খেত? তারা ব্যবসা না চালালে শ্রমিকরা কোথায় কাজ করত? তারা এই ব্যবসায় উন্নতি না করলে দেশের জিডিপি’র কী দশা হত? অথচ তারা খুবই সহজ এবং সরল এই বিষয়টি তাদের বোধে আনেননি যে ওই শ্রমিকরা কাজ না করলে তারা কাদের দিয়ে ফ্যাক্টরি চালাতেন? ওই শ্রমিকরা কম বেতনে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে তারা কি করে ব্যবসায় লাভ করেতন? ওই শ্রমিকদের পরিবার তাদের প্রিয় মানুষদের হত্যা করার কারণে মামলা করলে তারা কি করে ক্ষতিপূরণ দিতেন? কিংবা সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে কর রেয়াত না দিলে, শুল্ক রেয়াত না দিলে, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবী এড়িয়ে না গেলে তারা কি করে লাভের টাকায় সীমাহীন বিলাসীতা করতেন? কী করে বিদেশের সব চেয়ে দামী অঞ্চলে কোটি কোটি ডলার দিয়ে প্রসাদ কিনতেন? কী করে বিশ্বের সব চেয়ে দামী গাড়ি-বাড়ির মালিক হতেন? না, তারা এভাবে কখনোই ভাবেন না। তারা এই বিষয়ে এতটাই নির্লজ্জ যে ‘আমরা চাকরি না দিলে কি করে খেতিস’ এর মত সীমাহীন ঔদ্ধত্বপূর্ণ মন্তব্যও করতে পারেন।

রানা প্লাজার গার্মেন্ট শ্রমিকদের কথা হয়ত আর কিছুদিন পরই আমরা ভুলে যাব। এটাই নিয়ম। মানুষ খুব বেশিদিন কারো কথা ভাবতে ভালোবাসে না। এটা শ্রমিকরাও জানেন। তাই তারা খয়রাতি সাহায্যের চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করেন নিজের কর্মক্ষমতার উপর এবং ন্যায্য মজুরির উপর। আর সে কারণেই নিহত-আহত ভাই-বোনদের লাশের গন্ধ নাকে লেগে থাকা অবস্থায়ও তারা তাদের কাজের এবং ন্যায্য মজুরির দাবীতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। যে বিক্ষোভ এখনও চলছে। এরই মধ্যে মালিকপক্ষ নতুন এক চাল চেলে টানা তিন-চার দিন সাভারের আশুলিয়ার সকল কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে রেখেছিলেন। কেন রেখেছিলেন? কারণ মানবিক কারণে হোক কিংবা আন্তার্জাতিক চাপের কারণে হোক সাভারের দুর্ঘটনার পর সরকার শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিয়েছে। শ্রমিকদের বেতন কাঠামো পুনঃনির্ধারণ করেছে এবং তা মালিকপক্ষকে মেনে নিতে বলেছে। আর এটাই ওই মালিকদের সংগঠনটির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোস্বা হয়ে তারা কারখানা বন্ধ করে রেখেছিলেন। এই কাজটি করার আগে তারা একটি বারও ভাবেননি যে কারখানা বন্ধ করলে সেই কারখানায় কাজ করা কয়েকশ কিংবা কয়েক হাজার শ্রমিকের সমস্যা হলেও তারা তা মানিয়ে নিতে পারবে, কারণ তাদের জীবনটাই মানিয়ে নেয়ার জন্য ‘নিবেদিত’। কিন্তু মালিকদের কি হবে? তাদের পাজেরো, ল্যান্ড ক্রজার, ভলভো, নোয়াহ আর সেভেন জিরো সেভেন এর বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণের কি হবে? তাদের ছেলে-মেয়ে যারা ইউরোপ-আমেরিকায় পড়ছে তাদের কি হবে? সরকারের তথা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তার যে ব্যবসা চলে সেই টাকা ব্যাংক তথা সরকার তথা জনগণ টান দিলে তারা কি করে তা শোধ করবেন? না, সেই সহজ-সরল ভাবনাগুলোও তাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়নি, হবেও না। গতকালও মুরুব্বি আমেরিকার প্রতিনিধি এবং সংসদীয় দলে সঙ্গে বিজিএমইএ’র বৈঠক ছিল। সেখানেও মালিকপক্ষ তাদের চিরাচরিত মামদোবাজী দেখিয়েছেন। কারো সাথে কোনো আলাপ-আলোচনা না করে চোঙা হাতে বক্তৃতা দিয়ে কেটে পড়েছেন! এবং বিস্ময়কর হচ্ছে সরকার এবং মুরুব্বি আমেরিকার প্রতিনিধিকে এমন কাচকলা দেখানোর পরও তাদের বিরুদ্ধে সরকার বা সুশীল সমাজের কেউ ট্যাঁ-পোঁ করবেন না এও জানা কথা।

এসবই করুণ অধ্যায়। কিন্তু এর চেয়েও করুণ অধ্যায় হচ্ছে হাত-পা, চোখ-নাকবিহীন নারী শ্রমিকদের বর্তমান অধ্যায়। এমন শত শত সখিনা, জরিনা, কুলসুম, বিউটি, রেবেকা, সোহানা, শিউলীদের কথা উঠে আসছে। এদের কারও হাত নেই, কারও পা নেই। কারও এক পা নেই, কারও দুটো পা-ই নেই। কারও বা দুটো হাত নেই, কারও একটি হাত নেই। হাসপাতালের বেডে তেমনই চার নারী শ্রমিকের জবানিতে জানা গেল একজনের একটি নয় মাসের বাচ্চা আছে যে মায়ের পাশেই বেডে শুয়ে আছে। সেই বাচ্চাসমেত তাকে তার স্বামী নামক পশুটি ছেড়ে চলে গেছে! যাবার আগে সে যে টাকা পেয়েছিল সেই সব টাকা নিয়ে গেছে। আরও বলে গেছে ‘তুই আরও যে টাকা পেয়েছিস তার সব হিসেব দিলে এবং আবার কামাই করতে পারলে খবর দিস, আমি, আসব’। আর একজনের স্বামী বলেছে ‘এই পা ছাড়া তোকে দিয়ে আমার কি হবে? তুই কি কাজ করে খাওয়াতে পারবি?’ অন্য একজনের স্বামী কোনো কিছু না বলেই তার পাওয়া টাকা-পয়সা নিয়ে ভেগেছে। আর একজনের স্বামী বলেছে ‘ল্যাংড়া বউ দিয়ে আমি কি করব? তুই মরলি না কেন’?

শত শত ঘটানার মাত্র কয়েকটি মিডিয়ায় এসেছে। এমন আরও শত শত মেয়ের জীবনে নেমে এসেছে এই ধরণের দুর্দশা। এই দিকটা কি সাহায্যকারীরা কিংবা স্বেচ্ছাসেবকরা অথবা সরকার দেখছে? নাকি দেখতে পারছে? এ কোন সমাজ যেখানে মৃত্যু দুয়ার থেকে ফিরে আসা স্ত্রীর সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ করা যায়? এ কোন সমাজ যেখানে শ্রমজীবি নারী তার শ্রম বিক্রি করে বাবুগিরি ফলানো স্বামী নামক একটা পশুকে ভরণ-পোষণ করতে বাধ্য হয়? এ কোন রাষ্ট্র যে রাষ্ট্র এইসব কুলাঙ্গারদের বিচারের আওতায় আনতে চায়না বা পারেনা? আমরা জানি এই রাষ্ট্র বা সরকার জনগণের ভেতরকার এইসব ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র’ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় পাবে না। আমরা এও জানি যে সমাজের নৃপতিরাও এই সব সংকটের সমাধান দেবেন না বা দিতে পারবেন না। তাহলে কি হবে? রানা প্লাজার ওই মরণের দুয়ার থেকে ফিরে এসেও কি ওই নারীদের চিরস্থায়ী ‘মরণের’ কোলে আশ্রয় নিতে হবে? আমার এও জানি যে এইসব খবরগুলো নিয়ে দেশের বিভিন্ন নারীবাদী সংগঠন বা নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো হয়ত কিছুদিন প্রতিবাদ-ট্রতিবাদ করবেন। করবেন কিছু চটকদার সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, কিন্তু তার পর কি? সেই তো নারী অসহায় আর নিরুপায়। সেই তো নারী অবহেলিত এবং ত্যাজ্য। সেই তো নারী শ্রমিক তার ওই অর্ধেক শরীর নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আবার কারো দুয়ারে কিংবা কারো বাড়িতে কাজ করবেন। তা না হলে তার নিজের পেটেই অন্ন জুটবে না। আর দিন শেষে তার বা তাদের এইসব ‘ছোট ছোট’ সমস্যা নিয়ে বড় বড় মাথার ফুটন্ত ঘিলুর কোথাও সামান্যতম বত্যয় ঘটবে না।

রিহ্যাবিলেটেশন বা পুনর্বাসন নামক শব্দটিকে বোধ করি আমাদের নৃপতিরা একটা ফ্রেমে বেধে ফেলেছেন। সেই ফ্রেমের নাম হচ্ছে আহতের পুনর্বাসন। কিন্তু আহত হওয়ায় তার জীবনে আরও যে কদাকার এবং কুৎসিত ঘটনাগুলো ঘটতে পারে বা ঘটে চলেছে তার হদিস কেউ পাবে না। অথবা কেউ রাখে না। সে কারণে সাভারের এই দুর্ঘটনা কেবল সাড়ে এগারশ’ শ্রমিককে হত্যা করেনি, মানসিকভাবে হত্যা করেছে আরও হাজার হাজার নারীকে, যারা হয়তবা প্রাণ ধারণ করে আছে, কিন্তু সেই প্রাণে তার কোনো সুখ নেই, স্বস্তি নেই, আছে অনাগত ভবিষ্যতের আশঙ্কা আর দীর্ঘস্থায়ী দগদগে ক্ষত। এর জন্য দায়ী কে? ফ্যাক্টরি মালিক, মালিকদের মাতব্বর প্রতিষ্ঠান, সরকার, সমাজ না তাদের ভাগ্য? ওই অসহায় নারীরা হয়ত নিজের ভাগ্যকে দায়ী করে ক্ষণিকের মুক্তি খুঁজবে, হয়ত এক সময় এই অপমান-অনাচার মেনেও নেবে। তার পরও কি ওই সব নারীদের অসহাত্বের জন্য এই পচা-গলা সমাজের নধর দেহের কোথাও ক্ষতচিহ্ন এঁকে দেয়া হবে না? তার পরও কি এই রাক্ষস সমাজের প্যারাসাইট নৃপতিরা ‘ভাগ্য’ নামক পরলৌকিক ভিশন আউড়ে নিজেদের নির্লিপ্ততা ঢাকতে পারবেন? পারলেও কত দিন?

১৯ মে, ২০১৩
লেখকঃ মনজুরুল হক।
প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ আ লিটল ফাইটার স্লিপিং উইথ আর্মস, শকুমেন্টারি শকোথেরাপি, কর্পোরেট ডেমোক্রেসি, অসমাপ্ত বিপ্লব-অমর বিপ্লবী কমরেড চারু মজুমদার ইত্যাদি।

Saiful Islam

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular