Atheist Chapter
জীবিত অভিজিৎ রা্য়ের চেয়ে মৃত অভিজিৎ রায় অনেক বেশী শক্তিশালী

জীবিত অভিজিৎ রা্য়ের চেয়ে মৃত অভিজিৎ রায় অনেক বেশী শক্তিশালী

লিখেছেনঃ অর্বাচীন

গতকাল থেকে ঠিক দু’মাস আগে, ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে, বাংলাদেশে মুক্তমনা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ, এদেশে এ প্রজন্মের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র ডঃ অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর সাথে সাথে নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন তাঁর স্ত্রী, মুক্তমনা আন্দোলনের আরও একজন যোদ্ধা, বিজ্ঞান লেখক রাফিদা আহমেদ বন্যা । তাঁর মৃত্যুর একদিন পরেই ছিল কালিন্দী’র (“কালিন্দী” বিজ্ঞানমন্স্কতা ও অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে পরিচালিত একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও বিকল্প গবেষণা আন্দোলন কেন্দ্র) নিয়মিত মাসিক পাঠচক্রের নির্ধারিত দিন। সেদিন আমাদের পাঠচক্রের বিষয় ছিল ঐতিহাসিক বস্তুবাদ। অভিজিৎ রায়ের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, আমাদের সকলের প্রতি ঐ পাঠচক্রে বিশেষভাবে উপস্থিত থাকার আহ্বান ছিলো। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আমাদের করণীয়টুকু নির্ধারণের তাগিদ ছিল ঐ আহ্বানে। পূর্ব নির্ধারিত ঐ পাঠচক্রে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের করণীয় নির্ধারণে যে আলোচনাটুকু আমি করেছিলাম, মূলত তার উপর ভিত্তি করেই নিচের আলোচনাটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

২৬ তারিখ রাত সাড়ে ন’টার দিকেই টিভির স্ক্রলে প্রথমে অভিজিৎ রায় এবং বন্যা আহমেদের উপর হামলার খবর পাই। এই চ্যানেল থেকে ঐ চ্যানেল গেলাম, সবগুলো চ্যানেলের স্ক্রলেই একই খবর। দেবু’দাকে ফোন দেবার জন্য ফোনটা খুঁজছি, এর মাঝেই দেবু’দার ফোন এলো, সেই সাথে টিভি’র স্ক্রলে ভেসে এলো- অভিজিৎ রায় মারা গেছেন। দেবু’দাকে বললাম, অভি’দা মারা গেছেন। বিশ্বাস হচ্ছিলনা সংবাদটা, তীব্র কান্না পাচ্ছিল। কাঁদতেও পারছিলামনা। ফেসবুকের দেয়ালে দেয়ালে শুধু একটাই খবর ‘‘অভিজিৎ রায় নেই”।

পরদিন সারাটা দিন মাইগ্রেন আর ঘাড় ব্যাথা নিয়ে তন্দ্রাচ্ছন্নের মতো পড়ে রইলাম। চোখ বুজলেই অভি’দার রক্তাক্ত দেহ আর তার পাশে একটু সহযোগিতা পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা রক্তাক্ত বন্যা’দির ছবিটা বারবার ভেসে আসছিল। পিতামহ ছাড়া আমার কোন নিকট আত্মীয় আমার জীবদ্দশায় মারা যাননি। তাঁর মৃত্যুতে খারাপ লেগেছে। কিন্তু অভি’দা মারা যাওয়ার পর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। এত কষ্ট হচ্ছিল, কারো মৃত্যুতে এতটা শোকগ্রস্ত আমি কখনো হইনি (এমনকি অন্তত সাতদিন পর্যন্ত প্রচণ্ড বিষন্নতায় আক্রান্ত ছিলাম, মনে হচ্ছিল বড্ড কাছের কাউকে আমি হারিয়ে ফেলেছি)। যখনই আগের চেয়ে একটু সুস্থ্য বোধ করছিলাম, তখনেই ফেসবুক কিংবা অন লাইন পত্রিকা খুলে এ বিষয়ে সরকার বা বিভিন্ন সংগঠনের করণীয় সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছিলাম। কিছু আশার দেউটি তাদের মতো করে আলো জ্বালিয়ে প্রতিবাদের চেষ্টা করে যাচ্ছিল কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করতে দেখিনি।

অভিজিৎ রায় এর উপর হামলার পর তাঁকে বারবার পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছিল শুধুমাত্র ব্লগার হিসেবে।কিন্তু অভিজিৎ রায় শুধুমাত্র একজন ব্লগার ছিলেন না। ছিলেন একটি আন্দোলনের নাম। তাঁর মতো এমন অসাধারণ সংগঠক, এত উঁচু মানের বিজ্ঞান লেখক এদেশে আর একজনও আছেন বলে আমার জানা নাই। তিনি ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, ও প্রকৌশলী। ছিলেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষক। কিন্তু, মিডিয়া তাঁকে শুধুমাত্র ব্লগার হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল। রাজীব হায়দারকে নিয়েও মিডিয়া এমন একটি কাজ করেছিল। তাঁর মৃত্যুর পর মিডিয়া এবং মাহমুদুর রহমানের কল্যাণে নাস্তিক শব্দটির প্রতিশব্দ হয়ে গেছে “ব্লগার”। টিভি স্ক্রলে বারবার যখন ব্লগার অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর খবর ভেসে আসছিল, তখন আমার বাবা মা-ও সঙ্গে সঙ্গে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে অভিজিৎ রায় একজন নাস্তিক এবং ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন। অভিজিৎ রায় নাস্তিক ছিলেন, কথা সত্য। তিনি ধর্মের বিরুদ্ধে ছিলেন কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন না। সব ধর্মের কুযুক্তি, অপযুক্তি, পশ্চাৎপদতা, হিংস্রতার বিরুদ্ধেই তাঁর কলম ছিল সোচ্চার। কিন্তু, মিডিয়া যখন তাঁকে শুধুমাত্র একজন ব্লগার (প্রকারন্তে ইসলাম বিদ্বেষী; যা সাধারণ মানুষের মাঝে মিডিয়ারই তৈরী ধারণা বা পারসেপশান) হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়, তখন একজন উঁচু মাপের বিজ্ঞান লেখক, সাহিত্যিক, গবেষক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, সর্বপোরি সংগঠকের হত্যার প্রতিবাদ করতে সাধারণ মানুষকে নিরুৎসাহিত করে। অন্তত এখন পর্যন্ত, এ দেশের মুসলমানেরা একজন ইসলাম বিদ্বেষীর উপর নিপীড়ন বা হত্যার প্রতিবাদ করতে উৎসাহী নয়। বরঞ্চ, এ সব ক্ষেত্রে, সাধারণ মুসলিমরা নির্লিপ্ত থাকাই শ্রেয় মনে করে। এমনকি অনেকে এ ধনণের নিপীড়ন বা হত্যা করা সঠিক বলেও মনে করেন। এ কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এ দেশের প্রায় শতভাগ মুসলমানই শুনে শুনে মুসলমান এবং তাঁদেরকে এই শোনানোর মহান দায়িত্ব পালন করছেন কাঠ মোল্লারা। হায়রে! আমার দুর্ভাগা দেশ জানে না কত প্রজন্মের সাধনার পর, কতটা ত্যাগের পর একজন অভিজিৎ জন্মায়। না, অভিজিৎ রায়ের উপর দেবত্ব আরোপ করছিনা। অভিজিৎ রায় রক্তে মাংসের একজন মানবিক মানুষই ছিলেন। আমি নিশ্চিত, তাঁর পিতা ড. অজয় রায়ের ঘরে জন্ম না নিলে তিনি অভিজিৎ রায় হয়ে উঠতেন না। অজয় রায়ের ঘরে জন্মেছিলেন বলেই পঠন-পাঠনে-চিন্তায়-মননে যে চাষটুকু দিলে একজন মানুষ অতি সাধারণ হয়েও অনন্য সাধারণ হয়ে উঠতে পারেন সে পরিচর্যাটুকু তিনি পেয়েছিলেন। সেই সাথে তাঁর ছিল নিজ অধ্যবসায়, জানার অদম্য স্পৃহা, কুযুক্তি আর অপযুক্তির রমরমা ব্যবসা আর অন্ধ বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস, আর একজন যোগ্য সাথী- রাফিদা আহমেদ বন্যা। অন্যদিকে, একজন অজয় রায় বা রাফিদা আহমেদ বন্যা তৈরী হওয়ার জন্যও রয়েছে তাঁদের নিজ নিজ প্রচেষ্টার পাশাপাশি কয়েক প্রজন্মের উৎকর্ষ সাধনের নিরন্তর প্রয়াস। আমার বিশ্বাস, একজন বিজ্ঞান লেখক, সাহিত্যিক, গবেষক, প্রকৌশলী, শিক্ষক এবং সংগঠককে হত্যার প্রতিবাদে আরও অধিক সংখ্যক মানুষ সোচ্চার হতো। নিদেনপক্ষে, তরুণ প্রজন্ম আরও অধিক হারে তাঁর সৃষ্টির সাথে পরিচিত হতে উৎসাহিত বোধ করতো। অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জোরালো গণজোয়ার সৃষ্টি না হওয়ার দায় তাই অনেকাংশেই মিডিয়ার।

২৮ তারিখ বিকেল পর্যন্ত (পাঠচক্রকাল পর্যন্ত, এমন কি আজ পর্যন্ত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বা সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ হত্যাকাণ্ড বা হামলা সম্পর্কে কোন বিবৃতি প্রদান করেননি। এ হামলা কোন সাধারণ ঘটনা নয়। এমন নয় যে ছিনতাই করার সময় একজন রাম বা রহিম মারা গেছেন। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বিশেষত, এটি ছিল একটি বিশেষ চিন্তা বা দর্শণের উপর হামলা, বাক স্বাধীনতার উপর হামলা। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সরকার কোন বিবৃতি প্রদান করেনি, কেননা ক্ষমতাসীন দল ভোটের রাজনীতির মার প্যাঁচে অন্তত এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চায় না। আর সে কারণেই এখন পর্যন্ত, এ হত্যাকাণ্ড এবং হামলার বিচারের কোন অগ্রগ্রতি হয় না। আর এর মধ্য দিয়ে সরকার হত্যাকারী বা উগ্রবাদীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেয় যে হত্যা করলে কোন শাস্তি হয় না। কি ভয়ংকর!

তার চেয়ে ভয়ংকর ব্যপার হচ্ছে, প্রতিদিন একটু একটু করে হত্যাকারী তৈরী করা হচ্ছে। যে তরুণ অভিজিৎ রায়কে হত্যা করেছে, সে জানে এই হত্যাকাণ্ড তার কর্তব্য। এটি তার ঈমানী দায়িত্ব। এই হত্যাকাণ্ডের ফলে তার যদি ফাঁসিও হয়, তবে সে পরকালে পাবে শহীদের মর্যাদা; সরাসরি বেহেশ্ত। এই বিশ্বাসের ভাইরাসগুলোকে একদিনে তৈরী করা হয়নি, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, আমাদের রাষ্ট্র এই ভাইরাসগুলোকে তৈরী করেছে। পশ্চাৎপদ, যুক্তিহীন মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে শুধু এই কারণে যে- যে যত কম জানে, সে তত বেশী মানে। বেহেশ্তের টিকিটের নেশা ধরিয়ে দিতে পারলে এই মানুষগুলোর পক্ষে আর অধিকার, বঞ্চণা, নিপিড়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকেনা। কেননা, তারা মনে করে- ‘‘আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করছেন”, “দুনিয়াতে যার সম্পদ কম, আখেরাতে তার হিসাব তত সহজ”। তাছাড়া, প্রশ্ন করার মতো করে যোগ্য করেই তাদের তোলা হয়না। তাদের যে শুধু প্রশ্ন করার মতো যোগ্য করে তোলা হয় না তা নয়, তাদেরকে অর্থনীতির মূল স্রোতে নামার মতো করেও তোলা হয় না। ফলে, জীবন জীবিকার তাগিদে তাদের মসজিদ মাদ্রাসায় চাকরি নিতে হয় কিংবা মাদ্রাসা খুলে বসতে হয়। আমরা যারা তাদের সাথে এই প্রতারণার বিষয়টা বুঝি, তারাও ওদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই না, বরঞ্চ শুধুমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে ওদেরকে নিজেদের শত্রু বানাই। ওরা বা আমরা বুঝতেও চাই না, আমরা সকলেই আসলে শোষিত, এবং আমাদের লড়াইয়ের প্রধান জায়গাটা হচ্ছে, এই রাষ্ট্র যন্ত্রটিকে সাধারণ মানুষের সত্যিকারের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয়া এবং শোষণ-মুক্তির লড়াইটাকে অব্যাহত রাখা।

আমি জানি না, মৃত্যু অভি’দার কাছে কেমন লেগেছিল! বোধ করি, শারীরিক তীব্র যন্ত্রনা তাঁর হয়েছিল। হয়তো, রক্তক্ষরণের ফলে তিনি ধীরে ধীরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন, এবং এই জ্ঞান হারানোর মাঝেই তিনি মারা যান। ২০০৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখলদার আর প্রতিক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের হাতে আমিও মারাত্মক আহত হয়েছিলাম (চিকিৎসার এক পর্যায়ে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার বন্দোবস্তও করা হয়েছিল, তবে পরে আর যেতে হয়নি)। যদিও আমার জখম, অভি’দার তুলনায় কিছুই নয়, তবুও নিজের আহত হওয়ার বোধ থেকে আমি ধারণা করতে পারি- মৃত্যুর সময় অভি’দার কেমন অনুভূতি হচ্ছিল। মৃত্যু আমার কাছে খুব সাধারণ একটি ব্যাপার বলেই মনে হয়। জ্ঞান হারাতে থাকলে মানুষের যেমন বোধ হয়, বেশীরভাগ মৃত্যুর অনুভূতি তেমনই। মৃত্যু অবশ্যাম্ভবী। আর তাই আমি প্রতিদিন বা জীবনে বহুবার মরতে চাই না, মাথা উঁচু করে মরতে চাই । কুকুর বেড়ালের মতো সবাইতো আমরা নাওয়া খাওয়া করি, সন্তান জন্ম দেই, অতপঃর একদিন টুক করে মরে যাই। সন্তানের মাঝে জিন প্রবাহ ছাড়া মহাকালের অনন্ত যাত্রায় কিইবা চিহ্ন আমরা রেখে যাই! সুতরাং, এমন কাজ করে যেতে চাই যাতে মৃত্যুর সময় জীবনটাকে অর্থবহ মনে হয়। অভি’দার হয়তো আরও অনেক পরিকল্পনা ছিল, মানব জাতিকে দেয়ার মতো তাঁর অনেক সামর্থ্যও ছিল। এই দিতে না পারার অপূর্ণতা হয়তো তাঁকে ব্যাথিত করে থাকবে (হয়তো এই অনুভূতিটুকু বোধ করার সুযোগ পাওয়ার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন), তবে তাঁর মৃত্যু স্বার্থক। মানব জাতি নিশ্চয়ই অসাধারণ কিছু সৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হলো, তবে তাঁর মৃত্যু শত সহস্র তরুণকে লড়াই করার জন্য ডাক দিয়ে যায়। তাঁর কর্ম ভেঙ্গে চুরে দিয়ে যায় মানুষের মধ্যকার অন্ধ বিশ্বাস, কূপমণ্ডুকতা আর প্রতিবাদহীনতার অচলায়তনকে। অভি’দার চেহারাটা আমাদের কাছে কখনোই বিবর্ণ হবেনা, তাঁর চেহারায় পড়বেনা কোন বয়সের চিহ্ন। যতদিন বাংঙালি থাকবে, যতদিন অবিশ্বাসের দর্শণ থাকবে, ততদিন অভিজিৎ রায় থাকবেন। আর এ্খানেই অভিজিৎ রায়ের সফলতা।

তাই নিজের জীবনটাকে অর্থবহ করার জন্যই অভিজিৎ রায়কে সাথে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যাওয়া জরুরী। আর এই মুহূর্তে আমাদের কর্তব্যগুলো হচ্ছেঃ

১. অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

২. রাজু ভাস্কর্যের কাছে যেখানে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি নির্মাণ (যাতে নতুন প্রজন্ম তাঁর সম্পর্কে আগ্রহী হয়)।

৩. অভিজিৎ রায়ের সৃষ্টি-কর্ম সকলের মাঝে (বিশেষতঃ কিশোর তরুণদের মাঝে) ছড়িয়ে দেয়া। এক্ষেত্রে অভিজিৎ রায়ের জন্ম-মৃত্যুসহ বিভিন্ন দিবসে তাঁর সৃষ্টি-কর্ম নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, বই পড়া, পাঠচক্র, বিশেষ পত্রিকা প্রকাশ করা যেতে পারে।
৪. মুক্তমনা ব্লগটিকে আরও কর্মচঞ্চল করে তোলা এবং এতে কিশোর উপযোগী লেখা পোস্ট করা। এটিকে আরও বেশী সংখ্যক মানুষের কাছে কি করে পৌঁছে দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে, মুক্তমনা ব্লগ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে “মুক্তমনা” নামে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও গঠন করা যায়।
৫. পাঠ্যপুস্তকে অভিজিৎ রায়ের লেখা অন্তর্ভুক্ত করার আন্দোলন তৈরী (এটি সহজে আদায় হবে না, তবে সরকারের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হলে এটি হতে পারে)।
৬. সরবোপরি, লেগে-পড়ে থেকে বিজ্ঞানমন্স্ক-অসাম্প্রদায়িক শোষণ মুক্তির সংগ্রামে আস্থাশীল এবং মুক্তবুদ্ধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল রাজনৈতিক শক্তি তৈরী করতে হবে এবং তাকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে।

আমি বিশ্বাস করি, একজন জীবিত অভিজিৎ রা্য়ের চেয়ে একজন মৃত অভিজিৎ রায় অনেক বেশী শক্তিশালী। কেননা, অভিজিৎ রায় একটি চেতনার নাম। আর চেতনার কখনো মৃত্যু ঘটেনা।

আরিফুর রহমান

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular