Atheist Chapter
দেশ ফিরে যাচ্ছে মধ্যযুগে

দেশ ফিরে যাচ্ছে মধ্যযুগে

হিন্দুত্ববাদি কে? ইসলামিস্টই বা কে?
আমার সংজ্ঞা সহজ, সরল, সরলবোধ্য।

ধর্মানুভূতি আসলেই একধরনের যৌনসুড়সুড়ি। হিন্দুধর্ম বা ইসলামের সমালোচনা শুনলেই যাদের মধ্যে এই সুরসুড়ি যাগে, তারা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্ট। আর এক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক নেতাদের ভূমিকা হচ্ছে যাদের মধ্যে এই সুরসুড়ি আছে, বীর্য্য পতন না হওয়া পর্যন্ত তাদের হ্যান্ড জব দেওয়া।

আমি দুই পৃথিবীর বাসিন্দা। আমেরিকার মিট আপগুলো যখন এটেন্ড করি-সে অন্য পৃথিবী। এই পৃথিবী, প্রযুক্তিকে কাজ লাগিয়ে নিরন্তর উন্নতির সাধনা। তা শিক্ষা, সম্পদ, নিরাপত্তা-আরো সার্থক গনতন্ত্র এবং অর্থনীতির সন্ধানে মানুষের জয়যাত্রা। নিরলস প্রচেষ্টা।

আরকটা পৃথিবী ভেসে আসে ফেসবুক ফিডে। কখনো আই সি সিসের নিষ্ঠুরতা, লাভ জিহাদ, গনেশ চতুর্থী, গাজায় বোমাবর্ষন-কখনো বা মমতাময়ী সার্কাস। মনে হয় টাইম মেশিন উনবিংশ শতাব্দিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে আমাদের। আই সি সিসের গণহত্যা নিয়ে যায় সেই সপ্তম শতকের আরবে যেখানো কোন এক কাল্পনিক মহম্মদ অসংখ্য নৃশংস যুদ্ধের মাধ্যমে এক নতুন ধর্মের প্রচেষ্ঠায় রত।

খুব কঠিন সময় মানুষের সামনে। সভ্যতার সামনে। দ্রুত বদলে যাচ্ছে জীবিকা। আজকের স্কিল, কাল আসবে না কোন কাজে। অটোমেশনের ফলে কাজ হারাবে আরো অসংখ্য মানুষ। কেও ইম্যুইন নয়। এই আগের মাসেই গণহারে লে অফ হয়েছে আই বি এম, গুগল, মাইক্রোসফটে। ইনফি ব উইপ্রো এরা গোপনে তাড়িয়েছে অসংখ্য প্রগ্রামার। নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাজুয়েটদের চাকরি নেই-যাদের আছে তাদের কবে যাবে কেও জানে না। অবশ্য এর মানে এই নয়, অর্থনীতি রসাতলে যাচ্ছে। বরং উলটো। অটোমেশনের দৌলতে খুব কম কর্মী দিয়েই মুনাফা আসছে দ্রুত, অনেক বেশী। পৃথিবীর টপ ২% , যারা প্রযুক্তির, উৎপাদনের মালিক, তাদের ধন দৌলত সম্পদ বাড়ছে গুনিতক হারে। না চুরি ডাকাতি বা কোন রাজনীতি নেই এর মধ্যে। প্রযুক্তির উন্নতি এবং অটোমেশনের জন্য আজ যে ফাক্টরীর মালিক সে আরো ধনী-যে আগে কর্মী ছিল সে বেকার। আর হ্যা, ফাক্টরীর নাম মাইক্রোসফট, গুগল, আই বি এম সব হতে পারে। কর্মীদের হাল সেই এক বা আরো খারাপের দিকে।
৯৮% এর সামনে এক অনিশ্চিত অন্ধকার। এর থেকে পরিত্রানের রাস্তা একটাই। শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরবর্তন। চাই সেই শিক্ষা, যে শিক্ষার ফলে ছেলে মেয়েরা হবে সৃজনশীল। নতুন ব্যবসা, নতুন প্রযুক্তি-নতুন ভাবনার জন্ম দেবে। দিতেই হবে। আগে এগুলো ছিল অপশনাল। ভাল , মেধাবীদের জন্য। এখন সবার জন্য। কারন গয়ংগচ্ছ চাকরির ক্ষেত্রটাই হবে সংকুচিত। আমেরিকার স্কুলগুলিতে এই নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে-পাইলট প্রোগ্রাম ও চালু হয়েছে।
পৃথিবীর অনেক দেশই এই পরিবর্তিত যুগের যাথে পা মেলাতে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। এরা চীন, দক্ষিন কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান।

এই সব গুটীকয় দেশ বাদ দিলে, বাকী দেশগুলি এগোনোর বদলে, ফিরে যাচ্ছে মধ্যযুগে। ধর্ম, জাতি, সাম্প্রদায়িকতার পাঁকে গলা পর্যন্ত ডোবা। যেসব জাতি, দেশ উন্নত আধুনিক সৃজনশীল শিক্ষার ওপর ফোকাস না রেখে ধর্ম আর ট্রাডিশনের এঁটো পাত পরিস্কারে ব্যস্ত, তারা আজ না হলে কাল গৃহযুদ্ধ থেকে ধ্বংসের পথে পা বাড়িয়েছে।

সিরিয়া, ইজিপ্ট, লিবিয়া, ইরাক। হ্যা, আপনি আমেরিকাকে গালাগাল দিতেই পারেন। কিন্ত আসল সত্য হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই ধর্ম, জাতি ভিত্তিক সমাজ রাজনীতি এবং তজ্জন্য হানাহানি অন্যপৃথিবীর। কালের যাত্রার ধ্বনি যারা শুনতে পায় না- গৃহযুদ্ধে ধ্বংসই তাদের অলঙ্ঘ্য নিয়তি।

Lutfur Rahman

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular