মুসলমানি নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার। তাই লেখাটার অবতারনা করছি। আসলে মুসলমানদের সকল বর্বর প্রথার কোনটা ছেড়ে যে কোনটা বলি মাঝে মধ্যে আমি নিজেই খেই হারিয়ে ফেলি। আমার বাবা ও মা মুসলমান বিধায় কত কিছু যে দেখতে হয়েছে এর ইয়ত্তা নেই। তারপরেও বলি, বলতেই থাকি। জানিনা এসব কেউ বোঝেন কিনা কিংবা শোনেন কিনা। তবে আজকে যে বিষয় নিয়ে লিখছি তা আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারনেই এই বিষয়ের অবতারনা করছি।
এক জার্মান তরুণ দম্পতির ঘরের গল্প। এই দম্পতি। তাদের ৬ বছরের ছেলে ফিলিপ এর চুল কাটাতে পারছেন না এক বছর ধরে। ফিলিপ তার চুল আরো লম্বা রাখতে চাচ্ছে। ফিলিপের যুক্তি, লম্বা চুল তার পছন্দ এবং তার বোন লম্বা চুল রাখতে পারলে সে রাখতে পারবে না কেনো? ফিলিপ বলতে শিখেছে চুল লম্বা রাখাটা তার ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার। স্কুলের শিক্ষকরা তার লম্বা চুল নিয়ে আপত্তি করেন না, কিন্তু বাবা-মা কেনো প্রতিদিন চুল কাটতে বলেন?- এতে ফিলিপ খুব বিরক্ত।
এদিকে ফিলিপের বাবা-মা পড়েছেন বিপাকে। ছেলেকে ব্যাক্তি স্বাধীনতা আর ব্যাক্তিগত পছন্দের বিষয়টি তারাই শিখিয়েছেন। এখন ছেলের সম্মতি ছাড়া তার চুল কাটাতেও পারছেন না। ফিলিপের বাবা অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করলেন। ফিলিপ ফুটবলার হতে চায়। তাই বাবা ফিলিপকে ইন্টারনেটে বিশ্বের সেরা কিছু ফুটবলারদের হেয়ার-কাট দেখাতে ডাকলেন। গুগলে খুঁজে ফিলিপকে দেখানো হলো বেকহাম, মেসি, নেইমার, মার্কো রয়েস এর চমৎকার সব হেয়ার-কাট। তারপর বাবা জিজ্ঞেস করলেন,- এই হেয়ার স্টাইল নিয়ে তুমি ফুটবলার হবে? ঠিকাছে, হও। আই হ্যাভ নো প্রবলেম। ফিলিপ কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করে বাবাকে বললো,- ঠিকাছে, রয়েসের মতো কাট হলে আমি আমার চুল কাটাতে রাজি আছি।
গল্পটা বললাম, কারণ আমার ছোটবেলার কথা কথা মনে পড়লো। শিশু বয়সে আমাদের ইচ্ছা মতো চুল রাখার স্বাধীনতা ছিলো না। আমাদের সমাজে এখনকার শিশুদেরও সেই স্বাধীনতা বা পছন্দের অধিকার নেই। আমাদের চুল কাটাতে আমাদের বাবা-মা বা শিক্ষদেরকে এতোটা কষ্টও করতে হতো না। ওনারা জালি বেত দিয়ে আমাদের পিঠে কষে দুইটা বাড়ি দিলেই আমরা চুল কাটাতে রাজি হয়ে যেতাম। কি রকম হেয়ার-কাট চাই- আমাদেরকে কেউ জিজ্ঞেসও করতো না। শিশুদেরও যে পছন্দ বা স্বাধীনতা থাকতে পারে- আমাদের সমাজে কেউ তা ভাবেই না।
মুসলিম সমাজের আরো একটা ভয়ঙ্কর প্রথা মনে করিয়ে দিই। ছেলে শিশুদের সম্মতি ছাড়াই তাদের শরীরের একটা অঙ্গের একটা অংশ কেটে ফেলা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে শিশুদেরকে খাৎনা করিয়ে বাবা-মায়েরা উৎসবের আয়োজন করেন।
একটা তথ্য দেবার জন্য এই কথাগুলো লিখলাম। স্ক্যান্ডিনেভিয়া, ফিনল্যান্ড, হল্যান্ড, জার্মানি সহ বিশ্বের অনেক সভ্য দেশে কোনো শিশুকে খাৎনা করাতে গেলে শিশুটির সম্মতির দরকার হয়। খাৎনা করানোর আগে ডাক্তার সাহেব শিশুটিকে একা তার চেম্বারে নিয়ে জিজ্ঞেস করেন,- আমি তোমার গোপন অঙ্গের আগাটা কেটে ফেলে দিবো, তুমি কি রাজি আছো?
স্বভাবতই সৎ ডাক্তারদের চেম্বারে শিশুটিকে খাৎনা করানো হয় না। শিশুটির মুসলিম বাবা-মা পড়েন বিপাকে। তারপর সেই মুসলিম বাবা-মা তাদের শিশুটির সঙ্গে সেই প্রতারণাই করেন, যা সাধারণত একটা মুসলিম দেশের মুসলিম বাবা-মা’রা ইবাদত ভেবে করে থাকেন। তারা তাদের কমিউনিটির কোনো মুসলিম ডাক্তারের কাছে যেয়ে তাদের ছেলেকে না জানিয়ে বা সম্মতি না নিয়েই তাদের শিশুর শরীরের একটা অংশ কেটে ফেলে দেন।
ভাগ্যিস শিশুরা মামলা-মোকদ্দমা করতে জানে না। জানলে হয়ত এ রকম অসংখ্য বাবা-মা বিদেশে এসে জেলে যেতেন। তবে শিশুদের খাৎনা করানোর অপরাধে পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রতিবছর অনেক ডাক্তাররাই জেলে যাচ্ছেন, অথবা তাদের ডাক্তারী করার লাইসেন্স হারাচ্ছেন।
মধ্যযুগীয় বর্বর সংস্কৃতিকে বিশ্বের অশিক্ষিত অংশের মানুষেরা সুন্নত বা ইবাদত মনে করলেও শিক্ষিত অংশে তা আইনগত অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে- এমন একটা উদাহরণ দিলাম। মানুষের স্বাধীনতাকে খর্ব করে- এমন সব ধর্মই একদিন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষিত হবে।
এই ইসলাম ধর্মের পুরোপুরি বিনাশ না হলে এই জাতীয় বর্বর কর্মকান্ড কখনো থামবে বলেই আমার মনে হয়না।