Atheist Chapter
নাস্তিকদের প্রতি শামীমের হুমকি প্রসঙ্গে

নাস্তিকদের প্রতি শামীমের হুমকি প্রসঙ্গে

কোলকাতার কবি সোনালী দাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছে নির্যাতিত নিপীড়িত শোষিত সংখ্যালঘু মোল্লারা। সনু নিগমের মত সোনালী মুসলমানদের মাইক বাজিয়ে অন্যকে জ্বালাতন করার অধিকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখেননি। তিনি শুধু পাকিস্তানের মাশাল খানের হত্যা নিয়ে একটি কবিতা লিখেছেন তার ফেইসবুক পোস্টে। নিপীড়িত ক্ষমতাহীন সংখ্যালঘুরা মাশাল খানকে নিয়ে কবিতা লিখলে জ্বলে উঠল কেন? সোনালী দাস তার কবিতায় লিখেছেন, মশাল খান জেতেনা কখনো/নিজস্ব বমি মাখা শ্বাপদদের দুর্গন্ধী দাঁত/লক্ষ্যভ্রস্ট হবার নয় কখনো।/কানহাইয়ার আয়ু কতদিন আরো?/মুখ্যমন্ত্রীর মাথাও নাকি লাখে বিকোবে!”

ব্যস, তাতেই বাড়ির দেয়ালে ইসলামিস্টদের পোস্টার, খুনের হুমকি। এসব লেখার জন্য কবিকে মাঝ রাত অব্দি থানায় বসে থাকতে হয়েছে। বাংলাদেশের যেমন হত্যাকারী কে সেটা বাদ দিয়ে ব্লগার কি লিখে খুন হয়েছে তা খতিয়ে দেখার ভাড়ামো আমরা দেখেছিলাম, সোনালী দাসকে সেরকম থানা থেকে বলছে তার কবিতাটা মুছে ফেলতে!…

সনু নিগমের বাড়িতে নিপীড়িত নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের ভয়ে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। সোনালী দাস নাকি আগেও এই নিপীড়িতদের পক্ষ থেকে নানা রকম ঝামেলায় পড়েছিলেন। তার বাড়িতেও পুলিশ পাহারা বসবে কিনা জানি না। সত্যি একটা কথা বলি, বাংলাদেশে আজন্ম ‘সংখ্যালঘু’ বলতে যে নতজানু, মেরুদন্ডহীন পলায়ণপর এক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কথা আমরা জানি- সেই কনসেপ্ট থেকে আমার ঠিক বিশ্বাস হতে চায় না- তাহারা সংখ্যালঘু কিসের ভিত্তিতে? স্রেফ সংখ্যায় কম বলে?

সংখ্যালঘু বলতে আমরা বুঝি রফিউল রাব্বি, শ্যামলকান্ত্রি, রসরাজ, রমেল চাকমাকে…। রমেল চাকমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। তার পরনে কি কোন শার্ট ছিল? কোন কবি কি আজ তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবে ‘রমেলের শার্ট’ নাম দিয়ে? মনে পড়ছে বিপুল চাকমার কথা। বিপুল চাকমাকে হাতকড়া পরিয়ে তার মায়ের শেষকৃত্য করিয়েছিল পুলিশ। সে এতই বিপদজনক দুধর্ষ সন্ত্রাসী! আর অভিজিতের খুনিরা নাকি পুলিশের নজরদারীতে থাকা অবস্থায় সব দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে…। ওয়াশিকুর বাবুর খুনিদের ধরেও ছেড়ে দিয়েছে। অনন্ত, নীলয়দের খুনিদের দায় সংখ্যাগুরুরা কেউ নেয়নি। তাদের লেখা খতিয়ে দেখে তাদের খুন হবার ন্যায্যতা কতটা ছিল তার পরীক্ষার করা হয়েছিল।

সেই পরীক্ষা হয়ত সম্পন্ন হয়েছে। এখন এক মঞ্চে হেফাজত আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হাত পেছনে নিয়ে নতজানু হয়ে হুজুরের সামনে দাঁড়িয়ে, আর মুসলমানদের অঘোষিত খলিফা শাহ শফী কাষ্ঠ হাসি দিয়ে সটান চেয়ারে হেলান…। হেলিকপ্টারে আসেন, হেলিকপ্টারে যান। নাস্তিকদের হত্যা করার ফতোয়া দেন গণতন্ত্রকে মাইরে বাপ বলে!

শামিম ওসমানের একটা ইশারাই যথেষ্ঠ নাস্তিকদের জন্য। ছোট্ট ত্বকির জন্যও একটা ইশারাই যথেষ্ঠ ছিল। ত্বকি হত্যার বিচার বন্ধ করার জন্য কোন ইনডেমেনিটি পাশ করতে হয়নি। কোন হত্যার বিচার হবে আর কোনটা হবে না- সেটা এখন একজনই ঠিক করে দেন। শামিম শুধু ইশারা দেয়ার মালিক, বিচারের ক্ষমতা আরেকজনের হাতে। তিনি ‘সাত খুন মাফ’ করে দিলে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতিতে কাঁদে…।

তামজিদ হোসেন

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular