Atheist Chapter

শফি’র অসুখ

শফী হুজুরের অসুস্থতায় আগ বাড়িয়ে তার সুস্থতা কামনা করে ব্লগ-ফেইসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন কেউ কেউ। এই লোকগুলিই নরেন্দ মোদী কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্প গুরুতর অসুস্থ হয়ে লাইফ সাপোর্টে চলে গেলে এইরকম শুভ কামনা জানাতো কি?

আল্লামা শফী অসুস্থ হলে খুশি হতে হবে বা তিনি মারা গেলে ভি চিহৃ দেখাতে হবে তা বলছি না। ‘শুভ কামনায়’ যদি রোগ সারত তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রয়োজন হতো না। আল্লামা শফীও হাদিস মতে সাতটি কালিজিরা বেটে জয়তুনের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নাকের ভেতর প্রবেশ করালেই দিব্যি সুস্থ হয়ে যেতেন। হেলিকপ্টারে করে তাকে বিলাস বহুল হাসপাতালে আসতে হতো না…।

গোলাম আযম মারা গেলে তার ‘শোকসন্তপ্ত’ পরিবারের কথা মনে আসাটা কম বৈপ্লবিক ঘটনা নয়। আল্লামা শফী শত শত গোলাম আযম তৈরির কারিগর। আফগান যুদ্ধে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে শত শত কওমী ছাত্র জিহাদ করতে আফগানিস্তানে গিয়েছিল। সেই যুদ্ধফেরত ‘গাজিরা’ দেশে ফিরে ‘হরকাতুল জিহাদ’ নামে দেশে প্রথম সশস্ত্র জিহাদী সংগঠন খোলে। শফীর ছাত্ররাই এদেশে সশস্ত্র জিহাদের মাস্টার মাইন্ড…।

শফী হুজুর জয়নাল হাজারী বা শামীম ওসমান না। শামিম-হাজারীরা মারা যাওয়া মানে তাদের সন্ত্রাসের রাজত্ব শেষ হওয়া। কিন্তু শফী হুজুর সপ্তম শতাব্দির সন্ত্রাসবাদের একাডেমিক চর্চা করেন। তিনি মারা গেলেও সেই তত্ত্ব যতদিন পৃথিবীতে থাকবে ততদিন শত শত শফী, বাবুনাগরি, জসিমউদ্দিন রাহমানি, সাঈদী, নিজামীদের জন্ম হতেই থাকবে…।

এরকম লোকজন মারা গেলে তাতে আমার আলাদা কোন অনুভূতি হয় না। ব্যক্তি শফি মারা গেলে তার জায়গায় একই ছাঁদে একই মালমশলায় তৈরি আরেকজন এসে বসবে। এই উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস না হলে এই ধারা চলতেই থাকবে। তাই ব্যক্তি শফি মারা যাওয়া মানে সপ্তম শতাব্দির সন্ত্রাসবাদ-নারী নিপীড়নবাদের বিনাশ নয়। এ কারণেই এতে উল্লাসিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু গোলাম আযম মারা গেলে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি তো আমরা জানাবো না। কিংবা সাঈদী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলে তার সুস্থতার জন্য শুভ কামনা জানাবো না। ৫ বছর পর জসিমউদ্দিন রাহমানি জলে থেকে বের হয়ে এলে তার ধর্ম প্রচারের ‘গণতান্ত্রিক অধিকারের’ পক্ষে কারা কারা দাঁড়াবেন?

আমি এতখানি সুশীল হতে পারিনি। আমি এসব পারি না…।

সৈয়দ সানভী অনিক

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular