একজন সাংবাদিক ঘোষনা দিয়েছেন, তিনি ধর্ষিত মেয়েটিকে বিয়ে করতে চান। আজ থেকে আরো কয়েকদিন আগে আরেকটি ধর্ষনের ঘটনায় একজন সৌদি আরব প্রবাসী ভদ্রলোকও ঘোষনা দিয়েছিলেন যে, তিনি সেই ধর্ষিত মেয়েটিকে বিয়ে করতে চান। প্রথমের উল্লেখিত ধর্ষনের ঘটনাতে ধর্ষকের পরিবারও চাইছে যে ধর্ষকের সাথে ধর্ষিত মেয়েটির বিয়ে দিয়ে দিতে।
আমি এই সবগুলো ঘটনাতে বিনীত ভাবে আমার দ্বিমত জানাচ্ছি।
ধর্ষিত হয়ে যাওয়া মানেই একটি মেয়ে্র এমন হয়নি যে তার জীবনের সব শেষ।কিন্তু পুরো চিন্তাটাই এমন যে, যেহেতু তুমি ধর্ষিত হয়েছে তাই তুমি একটা বাতিল বস্তু। সুতরাং আমি বাতিল বস্তুকে বিয়ে করব। আর একজন বাতিল বস্তুকে বিয়ে করবার মধ্য দিয়ে যে মহিমা সেই ব্যাক্তির প্রতি ফুটে ওঠে সেটি বিষ্ময়ের। জাজমেন্টাল হয়েই বলছি যে, এটা অত্যন্ত কদর্য একটি ভাবনা।
খুন করা যেমন ক্রাইম, মিথ্যে কথা বলে পাহাড়ে বা সমতলে দাঙ্গা লাগাবার ধান্দা করা যেমন ক্রাইম, ছিনতাই করা যেমন ক্রাইম, ডাকাতি করা যেমন ক্রাইম, চুরি করা যেমন ক্রাইম, ঠিক তেমনি ধর্ষন করা একটি ক্রাইম।
কেউ একজন চুরির শিকার হলে আমরা বলি তিনি একটি ক্রাইমের শিকার হয়েছেন, কেউ একজন ডাকাতির শিকার হলে আমরা বলি তিনি ক্রাইমের শিকার হয়েছেন। ঠিক একইভাবে একটি ছেলে কিংবা একজন মেয়ে ধর্ষনের শিকার হলে তিনি ক্রাইমের শিকার হয়েছেন বলেই আমরা বলব।
ডাকাতির মাধ্যমে কারো ১০ কোটি টাকা খোয়া গেলে আমরা কখনো শুনিনি কেউ বলছেন, আহারে লোকটির বা মহিলাটির ১০ কোটি টাকা ডাকাতি হয়েছে, আমি ওকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে দেব।
সুতরাং একজন নারী বা পুরুষ কেউ ধর্ষিত হলে তাকে বিয়ে করবার ঘোষনা দেবার মধ্যে এক ধরনের নিষ্ঠুরতা রয়েছে। ক্রাইমের শিকার একজন মানুষ যাতে সঠিক বিচার পান, সেটির জন্য আমরা আন্দোলন করতে পারি, কথা বলতে পারি কিন্তু তাঁকে বাতিল বস্তু ভেবে বিয়ে করবার মত এসব কদর্য ঘোষনা দেবার দরকার নেই।
যে মেয়েটি বা ছেলেটি ধর্ষন নামে একটি ক্রাইমের শিকার হয়েছেন তিনি ধর্ষন পূর্ব অবস্থায় ঠিক যেভাবে বা যে প্রক্রিয়ায় তাঁর সঙ্গী খুঁজে নিতেন বা খুঁজে নিতে পারতেন, ধর্ষন নামের এই ক্রাইমের পর তাঁর সেই খুঁজে নেবার স্টেইট/স্কোপ একই থাকবে।সেটি যেন ক্রাইমের কারনে পরিবর্তিত না হয়।
বিয়ে করতে চাওয়া সেসব মানুষেরা দয়া করে এইভাবে ভাববেন। এই আশা করি