Atheist Chapter

পেরোনোর কিছু নেই

(১) শেখ হাসিনার থেকে বড় আওয়ামীলীগার ফেসবুকে দেখলেই ব্লক করুন। এই অভাজনের এটা অনুরোধ। একটা গল্প বলি, গল্পটা মোহাম্মদ হান্নান এর “বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ইতিহাস” বই থেকে জেনেছি। বঙ্গবন্ধুকে যে রাতে খুনীরা মেরে ফেলতে এসেছিলো সেদিন দুপুরে [১৪- অগাস্ট] খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর জন্য একবাটি বালি হাসের তরকারি বেগম মুজিবের হাতে দিয়ে বলেছিলো, মুজিবকে খাইয়ে দিও। মুজিবুর বালিহাঁসের মাংশ খুব পছন্দ করে।

(২) বিডিয়ার এর নৃশংস হত্যাকান্ডের পরবর্তী একটা দৃশ্য দেখে আমি খুব একটা অবাক হইনি। দৃশ্যটা হচ্ছে বিডিয়ার এর খুনীদের পক্ষের সব আইনজীবি বি এন পি’র। অথচ এই হত্যাকান্ড নিয়ে সে কি তাদের বাণী। দুষ্টু মউদুদ আহমেদকে আমি এক্ষেত্রে স্বরণ করতে পারি।তিনি বিচার ঠিক হয়নি, অমুক হয়নি, তমুক হয়নি বলে সারাদিন কথার খই ফটাতেন। এই হত্যাকান্ডে ৫৭ জন অফিসার নিহত হলেও ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সালে সেনাবাহিনীতে হাজার হাজার সেনাবাহিনীর সদস্যদের কোর্ট মার্শালের নামে হত্যার কথা কেউ খুব একটা বলেনা আজকাল। অথচ বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর সদস্যদের এই করে নৃশংস ভাবে হত্যা খুনী জিয়াই করেছিলো। আমি আনোয়ার কবিরের একটা বই পড়ছিলাম “সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা”। বইটির পাতায় পাতায় রয়েছে সব সেনা সদস্যদের রক্তাক্ত নাম। কর্ণেল তাহের বীর উত্তম, কর্পোরাল খায়রুল আনোয়ার, কর্পোরাল আবদুল ওয়াদুদ, কর্পোরাল নূরুল ইসলাম, ফ্লাইট সার্জেন্ট এ কে এম মাইন উদ্দিন, এল এস সফিকুর রহমান, ফ্লাইট সার্জেন্ট কবির আহমেদ, ল্যান্স নায়েক শামসুল হুদা, কর্পোরাল এম মহিউদ্দিন, মেজর জহিরুল হক খান বীর প্রতীক, সার্জেন্ট আফসার, ব্রিগেডিয়ার মহসিন উদ্দিন আহমেদ, কর্ণেল নোয়াজেশ উদ্দিন, কর্ণেল এম এ রশিদ, লেফটেনেন্ট কর্নেল এ ওয়াই এম মাহফুজ, লে কর্ণেল এম দেলোয়ার হোসেন, লে কর্ণেল শাহ ফজলে হোসেন, মেজর এ জেড গিয়াসুদ্দিন আহমেদ, মেজর রওশন ইয়াজদানী ভুঁইয়া, মেজর কাজী মুমিনুল হক, মেজর মুজিবুর রহমান, ক্যাপ্টেন মোঃ আব্দুস সাত্তার, ক্যাপ্টেন জামিল হক, লে রফিকুল হাসান খান সহ আরো হাজার হজার সেনা সদস্য।

(৩) মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় পিছিয়ে গেলো। হাসতে না চাইলেও হাসি চলে আসে। এই হত্যা মামলাটি হচ্ছে ইতিহাসে এমন একটি মামলা যেটা দিতে বাংলাদেশের বিচার ব্যাবস্থাকে তলানির উদাহরনে দেখানো সম্ভব। এরশাদকে লাইনে রাখার জন্য এই মামলা প্রায়ই টিউন করা হয়। মঞ্জুরের হত্যা মামলা হলে দেশের আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা পাবে এটা আসলে এই মামলার মূল অব্জেকটিভ নয়। এই মামলার মূল অব্জেকটিভ হোলো এরশাদকে সাইজ করা, লাইনে রাখা। এরশাদ কয়েকদিন আগে আওয়ামীলীগের সাথে মাস্তানি করেছিলো নির্বাচন নিয়ে সুতরাং এই মামলার রায় দুইদিন আগে হয়েই যাচ্ছিলো। এখন মাস্তানি বন্ধ, তাই প্রথমে বিচারপতিকে পরিবর্তন, নতুন করে তদন্তের নির্দেশ। [ http://bit.ly/1fXnHOe]

(৪) তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না। জানতে চেয়ো না তুমি নষ্ট ভ্রষ্ট ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলের কথা: তার রাজনীতি অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমন্ডলী,জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ,মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন,করে আমাকে পীড়ন কোরো না। তার ধানক্ষেত এখনো সবুজ, নারীরা এখনো রমনীয়, গাভীরা এখনো দুগ্ধবতী, কিন্তু প্রিয়তমা, বাঙলাদেশের কথা তুমি কখনো আমার কাছে জানতে চেয়ো না;আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, তার অনেক কারণ রয়েছে।“

[হুমায়ুন আজাদ। কাব্যগ্রন্থঃ পেরোনোর কিছু নেই।

সৈয়দ সজীব আবেদ

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular