Atheist Chapter

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অত্যাচার

সংখ্যালঘুদের উপড়ে বাংলাদেশের মুসলিমরা কি অসহনীয় নির্যাতন ছালায় তার আর এক নমুনা তুলে ধরছি আজকে। আমরা আজকাল আর মানুষের পর্যায়ে নিজেদেরকে ফেলতে পারছি না। আমি নাস্তিক । আমি সবসময় এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি । নিজে একজন উভয়কামি মানুষ আমি। আমাদের দেশে এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলে না। সবাই সমকামিতাকে অপরাধের চোখেই দেখে। আজ কথা বলব এক অসহায় হিন্দু মানুষের কথা।

ফেসবুকে বিতর্কিত একটি স্ট্যাটাসের অভিযোগ তুলে রংপুর সদর উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত ঠাকুরপাড়া গ্রামে তাণ্ডব চালানো হয়েছে প্রাণ গেছে একজনের তবে যার বিরুদ্ধে কথিত এই স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগ সেই টিটু রায় ফেসবুক ব্যবহার তো দূরে থাক, কোনও পড়ালেখাই জানে না বলে দাবি করেছে তার পরিবার স্বজনদের দাবি, টাকাপয়সা ধারদেনা করে প্রায় সাত বছর ধরে সে এলাকাছাড়া

রংপুরের সদরের পাগলাপীর ঠাকুরপাড়া গ্রামে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) এই হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়,ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা টিটু রায় নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেন। তিনি থাকেনও সেখানেই। কয়েকদিন আগে টিটুর নামে একটি ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর এক স্ট্যাটাস দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসী। কারণে পাগলাপীর, মমিনপুর, হাড়িয়াল কুঠিসহ আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর আশেপাশের ৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঠাকুরপাড়া গ্রামে হামলা চালায়। সময় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শত শত রাউন্ড টিয়ারশেল রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে পুলিশ গুলি চালালে আহত হন ছয় জন। তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে হামিদুল ইসলাম নামে এক তরুণ মারা যান। 

তবে এই সংঘর্ষের মধ্যেই ঠাকুরপাড়ার অন্তত ৩০টি বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, ভাঙচুর করা হয় ২০টি বাড়ি। হামলাকারীরা বাড়িঘরের মালামাল, বাসনপত্র, গরু-ছাগলও লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।

ঠাকুরপাড়াবাসী ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, এই গ্রামের মৃত খগিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে টিটু রায়। সে লেখাপড়া করেনি, কোনোমতে নিজের নামটা শুধু স্বাক্ষর করতে জানে। টিটু রায়ের ছোট ভাই বিপুল চন্দ্র জানান, প্রায় সাত বছর আগে পাওনাদারের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে ঢাকায় চলে যায় টিটু। সে বিভিন্ন এনজিওর কাছে ঋণ নিয়ে টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। পাওনাদারদের অত্যাচারে বাড়ি থেকে একাই পালিয়ে চলে যায়। এরপর সে কখনই তার বাড়িতে আসেনি। প্রায় পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের ঢাকায় ডেকে নেয়। এখন সে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে স্ত্রীসহ কাজ করছে।

বিপুল বলেন, ‘তার (টিটু) সঙ্গে আমাদের পরিবারের কোনও যোগাযোগই নেই। বাবা অর্থের অভাবে আমাদের লেখাপড়া শেখাতে পারেননি। আমার বাবা ছোট একটি চায়ের দোকান করে কোনোরকমে সংসার চালাতেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিটু রায়ের নামে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে বলে আমরা কয়েকদিন আগে শুনেছি। কিন্তু আমার ভাই টিটু তো লেখাপড়া জানে না। সে ফেসবুক চালাবে কী করে?’ বিপুল দাবি করেন, ‘আমাদের ধারণা অন্য কেউ টিটু রায়ের নামে ফেসবুকে আইডি খুলে এই অপকর্ম করেছে। বিষয়টি তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।’

বিপুল বলেন, ‘কয়েকদিন আগে থেকে ঠাকুরপাড়া গ্রামের পাশেই সলেয়াসার এলাকায় কিছু লোক এই ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার শুরু করে। তারা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য টিটুকেই অভিযোগ করে এবং এ জন্য হিন্দু অধ্যুষিত ঠাকুরপাড়া গ্রামে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। আমার ভাইকে ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।’

এদিকে টিটু রায়ের মা অনিলা রানী বলেন, ‘সাত বছর ধরে আমার ছেলে বাড়িছাড়া। পাওনাদারের জ্বালায় সে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এরপর আর কখনই বাড়িতে আসেনি। আজ অবধি তার সঙ্গে কোনও কথাও হয়নি। দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে আমার দিন গেছে।’ টিটুকে ফাঁসিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শুক্রবার হামলাকারীরা টিটু রায়ের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে আগুন দিয়েছে এবং মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় পাশের কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়েছে। বিপিন চন্দ্র নামে বৃদ্ধ এক প্রতিবেশী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যারাই এই হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক। আমাদের কী অপরাধ? আমাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হলো, মালামাল লুট করা হলো কেন? এর বিচার না হলে আমাদের পক্ষে এখানে বসবাস করা সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কতক্ষণ পুলিশ আমাদের পাহারা দেবে। আমরা এখনও হামলার আশঙ্কা করছি। দায়ীদের অবিলম্বে তাদের নেতাদেরসহ গ্রেফতার করা উচিত।’

রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যে ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা বলে এই হামলা চালানো হলো তা এখনও আমাদের হাতে আসেনি। আমরা সেটা পাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের টিম নারায়ণগঞ্জে টিটুকে আটকের জন্য গেছে। তাকে পাওয়া গেলে ঘটনার রহস্য জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নস্যাতের জন্য জামায়াত-শিবির হামলার এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।’

শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে রংপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি ফেসবুকে কারা স্ট্যাটাস দিলো, টিটু রায় আদৌ তা দিয়েছে কিনা সব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অপরদিকে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।

আমরা এমন এক দেশে বাঁশ করি যেখানে যেকোনো মানুষকে মিথ্যা মামলা অথব অসহায় কত মানুষকে ফাঁসান যায়। আমরা মনে করি আমরা আসলেই সুখের সর্গে বাস করি । কিন্তু আসলে ব্যাপারটা তা না। সংখ্যালঘুরা আসলেই অনেক নির্যাতনের শিকার হয় । আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এসকল বিষয় নিয়ে কথা বলেন না, বরং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ইচ্ছা করেই এসকল নির্যাতনকে আশকারা দেয় যা অনেক দুঃখজনক।

Khairulla Khandaker

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular