Atheist Chapter

আহ…বাংলাদেশ

এই কষ্টের সময়েও ডিবির অফিসার আরমান আলী’র আদালতে দেয়া বক্তব্য পড়ে কিছুক্ষণ হাসলাম। আরমান আদালতকে বলেন, “শহীদুলের সহযোগীদের খুঁজে বের করার জন্য রিমান্ড প্রয়োজন”

হাসলাম কেন জানেন? কথাটা শুনে মনে হোলো শহীদুল আলম কোনো পাড়ার বখাটে মাস্তান যুবক যাকে গ্রেফতার করে তাঁর সহযোগীদের খোঁজা হচ্ছে।

এই লোকটি ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন, পি এইচ ডি ডীগ্রি নিয়েছেন। অসম্ভব মেধাবী এবং ভালো বক্তা। অত্যন্ত সজ্জন ব্যাক্তি হিসেবেই আমি তাঁকে জানি।

মনে পড়ে, ১৫/১৬ বছর আগে আমি আর আমার স্ত্রী সময় পেলেই দৃক গ্যালারিতে যেতাম সেখানকার নানা এক্সিবিশনে। প্রায়ই দেখতাম খর্বকায়, শশ্রুমন্ডিত এই ভদ্রলোককে। ইংরেজী ভাষায় তাঁর দখল ছিলো অসামান্য। বেশ কিছু বছর আগে লন্ডনের মাইল এন্ড স্টেশনে একবার তাঁর সাথে দেখা। কথা বলতেই ঝলমলে একটা হাসি দিয়ে আমার খবর জানতে চাইলেন, খোঁজ নিলেন। অথচ আমি ছিলাম তাঁর সম্পূর্ন অপরিচিত।

এমন একজন গুনীজনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে আদালতে, ভাবতেই গা টা কাঁটা দিয়ে ওঠে।

মনটা একেবারেই ভেঙ্গে গেলো আদালতে শহীদুল সাহেবের বক্তব্য শুনে। আদালতে তিনি দাবি করেন,

“গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তাঁকে গাড়িতে তোলা হয়। তখন তাঁর চোখ বেঁধে ফেলা হয়। হাতে পরানো হয় হ্যান্ডকাপ। শহিদুল আলম আদালতকে বলেন, আমাকে দুই ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসা করা হয়। আমাকে সারা রাত হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাখা হয়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে”

এই দেশ থেকে কেন মেধাবী ছেলে-মেয়ে গুলো চলে যায় এবং আর ফিরে আসেনা, কেন এত ব্রেইন ড্রেন হয়ে যাচ্ছে, কেন গুনীরা আর ফেরেনা নীড়ে, বুঝতে পারছেন তো আপনারা? এই যে গণিত অলিম্পিয়াডে যে ছেলেটি স্বর্ন পদক জিতলো, খোঁজ নিয়ে দেখবেন বছর চারেক পর। জেনে নেবেন সে হয়তো থাকবে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা নাহলে অস্ট্রেলিয়ায়। এটাই নিয়তি…

এখানেই কিন্তু শেষ না। প্রধানমন্ত্রী এই যে ডক্টর আনিসুজ্জামান স্যারকে এত শ্রদ্ধা করেন, তিনি যে রাস্তায় হাঁটেন, প্রধানমন্ত্রী পেছনে পেছনে হাঁটেন বলে প্রচার করেন। আজকে আনিস স্যারও যদি একটু সাহসী হয়ে এই রেজিমের বিরুদ্ধে কিছু বলেন, স্যারেরও একই দশা হবে।

ভাবতেই গায়ে কাটা দেয় জাফর স্যার, আনিস স্যার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যার উনাদের ঠিকি এইভাবে টেনে হেঁচড়ে সরকারী গোয়েন্দা, পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার ঘরে…

আহ…বাংলাদেশ…বাংলাদেশ…

ইয়াজ কাওসার

লেখালেখি করা আমার প্যশন। ভালো লাগে ধর্ম, আশে পাশের মানুষ, সমাজ, সংস্কৃতি, জীবন-যাপন ইত্যাদি নিয়ে লিখতে। বিশ্বাসের দিক থেকে নাস্তিক। সংক্ষেপে বলতে গেলে মানবতাবাদী হয়ে উঠাটাই আমার আদর্শ। আমার ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular