হলি আর্টিজানে জিহাদিদের মানুষ খুন করার আপডেইট দিতে গিয়ে চোখের পানি নাকের পানি এক করে কান্দিয়া জারেজার বেহাল অবস্থা নাকি আমাদের আই জিপি শহিদুল হক সাহেবের? আমি এতো নিঠোর হলাম কেমনে, এক বিন্দু অশ্রুজলে আমার চোখের পাতাও ভিজলোনা ভদ্রলোকের কান্নাকাটি দেখে?
অশ্রু আসবে কোত্থেকে হুজুর, অভিজিৎ, অনন্ত, ওয়াশিকুর, নীলয়দের জন্যে কাঁদতে কাঁদতে জল শুকিয়ে চোখ যে ধুসর বালুকাময় মরুভুমি হয়ে গেছে। অভিজিতের স্ত্রীর রক্তমাখা জামাকাপড়, তার দুহাত বাড়ানো আকুতি দেখে আপনারা দূর থেকে হেসেছেন বিদ্রুপের অট্টহাসি। অনন্তের মায়ের কান্দনে, বোনের বিলাপে বনের পশু পাখিরাও চোখের জল ফেলেছে আর আপনারা—- সেই দিন আপনাদের প্রভু মন্ত্রীরা কে কী বলেছিলেন, কেমন শয়তানের হাসি হেসেছিলেন সব আমরা দেখেছি সব আমাদের মনে আছে।
মনে আছে আপনি হলি আর্টিজানের ঘটনার আগে লেখকদের লেখার সীমানা বাউন্ডারি দেখিয়ে দিয়েছিলেন। থাক, ওসব বলে আর লাভ নেই। যতদিন বেঁচে আছি সকল খুনের জন্যে আমি দায়ী করবো আপনাকে আপনার ধর্মান্ধ সরকারকে আপনার সমমনা ভন্ড মানুষদের।
মনে রাখবো আজীবন আমাদের হাত পা মুখ বন্ধ করে দিয়ে, আমাদের হাতের কলম কেড়ে নিতে আপনারা কি চেষ্টাই না করেছিলেন। সপ্তম দুঃস্বপ্ন-বহুদিন আগে ২০০৬ সালে ‘আল্লাহ হাফিজের দেশে’ শিরোনামের একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, সিলেটের জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে থাকা এক বেবি টেক্সির পেছনে লেখা দেখেছিলাম ‘আপনার মেয়েকে মাদ্রাসায় পাঠান’। আর ১০ বছর পরে ২০১৬ সালে দেখলাম এক বেবি টেক্সির পেছনে লেখা ‘আল্লাহর কুদরতের কাছে বিজ্ঞান বড়ই অসহায়’।
১৫/১৬ সালে আই জি পি শহিদুল হক হাটহাজারীর কুখ্যাত আহমেদ শফীর ‘ নাস্তিক কতল করা ফরজ ‘ ফতোয়ার সমর্থন দিয়েছিলেন আর ৩ বছর পর ২০১৯ সালে এসে তারই পদাংকনুসরণকারী (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ মানুষ খুনের হুকুমদারী আহমেদ শফীকে ‘অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীন নেতা’ বলে ঘোষণা দিলেন। এটা অবশ্য আপনাদের কাছ থেকে পাওয়া অপ্রত্যাশিত কিছু ছিলনা বরং খুবই প্রত্যাশিত ছিল। মুক্তচিন্তক মানুষের প্রতি শফির ঘৃণা নারী জাতির প্রতি শফীর জঘন্য বিশ্বাস, আর আপনাদের বিশ্বাসে যে কোনো পার্থক্য নেই সেটাই আপনি আবার প্রমাণ করলেন।