এমডি মাহাদি হাসান: পৃথিবীর আর দশটা ধর্মের মতই মুসলমানরা দাবী করে তাদের ধর্মগ্রন্থ কুরআন একটি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত বা রচিত গ্রন্থ। মুসলমানরা দাবী করে তাদের আরবীয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কুরআন রচনা করে সেই রচনাগুলোকে পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের নবী মুহাম্মদের কাছে ফেরেশতা মারফত পাঠিয়েছে। পৃথিবীর আর দশটা ধর্মের মতই মুসলমানরা প্রমাণ দিতে পারে না যে কুরআন আসলেই কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ কিনা। যেমন মুসলমানরা প্রমাণ দিতে পারে না কুরআন আসলেই কোন দৈব শক্তিতে মুহাম্মদের কাছে এসেছে কিনা। বরং ইতিহাস সাক্ষি দেয় মুহাম্মদ যা কিছুই সৃষ্টিকর্তার নামে নিজের মুখে বলতো সাহাবাগণ তাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে সেগুলোকে সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে মেনে নিত।
কিন্তু মুহাম্মদ বাদে একজনও ছিল না যে মুহাম্মদের দাবীকৃত ফেরেশতা জিব্রাইলকে দেখেছে। কেউ জিব্রাইলকে দেখেনি, কেউ জিব্রাইল নামের অদৃশ্য কারো কথা শুনেনি এমন কি মুহাম্মদ বাদে অন্য কেউ জিব্রাইলের অস্তিত্বের কোন প্রমাণই প্রত্যক্ষ করেনি। শুধু মুহাম্মদ দাবী করেছে তার কাছে এক অদৃশ্য ফেরেশতা আসে এবং কোন শব্দ না করে তার কানে কানে কিছু বানী দিয়ে যায়। সেই বাণীগুলোই মুহাম্মদ তার সাহাবাদের বলে দেয়। সম্পূর্ণ কুরআনই প্রমাণহীন কোন কিছুর নাম করে মুহাম্মদ ব্যক্ত করেছে, আল্লাহর বাণী বলে প্রচার করেছে। অর্থাৎ কুরআন যে কোন সৃষ্টিকর্তার বাণী এটার প্রমাণ হলো একমাত্র প্রমাণহীন অন্ধবিশ্বাস। মুহাম্মদের প্রতি তার অন্ধ অনুসারীদের অন্ধবিশ্বাস এবং সেসব অনুসারীদের প্রতি পরবর্তী প্রজন্মের মানুষের অন্ধবিশ্বাস। অর্থাৎ কুরআন আল্লাহর বাণী এটার একমাত্র প্রমাণ হলো যুগ যুগ ধরে চলে আসা কিছু মানুষের অন্ধবিশ্বাস। পুরো প্রক্রিয়াটিই দাড়িয়ে আছে প্রমাণহীন অন্ধবিশ্বাসের উপর।
কুরআন কোন সৃষ্টিকর্তার বাণী কিনা তার প্রমান যেমন মুহাম্মদ দিতে পারেনি মোটেও ঠিক একই ভাবে মুসলমানরাও আজ পর্যন্ত একটা প্রমাণও হাজির করতে পারেনি কুরআন ঐশী বাণী তার পক্ষে। কোন প্রকারের প্রমাণ না দিতে পেরে মুসলমানরা কিছু অপকৌশল অবলম্বন করে কুরআনকে আল্লাহ নামের আরবীয় সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবী করে। তারা কুরআনের নানা রকমের ভূল ভ্রান্তিপূর্ণ আয়াতগুলোকে বিজ্ঞানময় বলে দাবী করে। এভাবে প্রাচীন আরবের এক সাধারণ মানুষের লেখা গ্রন্থকে বিজ্ঞানময় কিতাব বানাতে মুসলমানরা এমন কোন অপকৌশল নেই যা তারা করে না। তবুও তারা তাদের ভূলে ভরা মুহাম্মদের অজ্ঞতা সম্পন্ন গ্রন্থকে বিজ্ঞানময় বানাতে পারেনি। বরং কুরআনের নানা রকমের ভূল ভ্রান্তি মানুষের সম্মুখে আরো বেশি করে উন্মুক্ত হয়েছে। মুসলমানরা যত কুরআনের অর্থকেই বদলে দিয়ে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাক না কেন, আজ পৃথিবীর প্রায় সব মানুষই জেনে গেছে কুরআনের নানা প্রকারের ভূল ভ্রান্তি সম্পর্কে। এজন্য মুসলমানরা বিজ্ঞানকে ভূল ভাবে উপস্থাপন করে, কুরআনে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থ বদলে বিজ্ঞানের অনুকুলে কুরআনের নতুন এবং ভিন্ন অর্থ এনে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানিয়ে প্রচার করে কুরআন বিজ্ঞানময় গ্রন্থ। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো ভূলে ভরা কুরআনের অর্থকে বদলে দিয়ে কুরআনের ভূলকে সংশোধনের মাধ্যমে যে বিজ্ঞানময় কিতাব বানানো হয় সেটি মুহাম্মদ রচিত কুরআন থাকে না। সেটি হয়ে যায় আধুনিক বিজ্ঞান জানা মুসলমানদের দ্বারা সংশোধিত কুরআন। কুরআনের ভূলকে সংশোধন করে এর অর্থকে বদলে দিয়ে একে বিজ্ঞানময় বানানোর কারণেই বরং প্রমাণ হয় যে কুরআন আসলে এক প্রাচীণ আরবের ভ্রান্ত ধারণাগ্রস্থ মানুষের লেখা বই। এজন্যই এর ভূলকে সংশোধন করতে ভিন্ন অর্থ আনতে হয় এবং নতুন নতুন ব্যাখ্যার আমদানী করতে হয়। যদি কুরআন সত্যিই কোন সৃষ্টিকর্তার গ্রন্থ হতো তবে কুরআনের অর্থের পরিবর্তন করতে হতো না। তাও এমন ভাবে অর্থের পরিবর্তন করে যেন সেই নতুন অর্থটি বিজ্ঞানের সাথে হুবহু মিলে যায়। বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে কুরআনের নতুন অর্থ করায় এটাই প্রমানিত হয় কুরআন আসলে মুহাম্মদের লেখা একটি প্রাচীণ ভ্রান্তির গ্রন্থ। কারণ সৃষ্টিকর্তার গ্রন্থকে অর্থের পরিবর্তনের মাধ্যমে সংশোধন করে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানানোর প্রয়োজন পরে না; যা মুসলমানরা করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানায়।
কুরআন কোন অতিজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ নয়। বরং কুরআন এক প্রাচীণ আরবের বুকে দাড়িয়ে থাকা অজ্ঞ মানুষের লেখা বই সেটা পৃথিবীর বহু বিখ্যাত জ্ঞানী মানুষেরা প্রমান করে দিয়েছে। আমিও গত সবকটি পর্বে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ করে দিয়েছি যে কুরআন কোন অতিক্ষমতাবান সৃষ্টিকর্তার রচিত গ্রন্থ নয়। বরং কুরআন মুহাম্মদের মতো এক অজ্ঞ আরবের লেখা বই।
কুরআন মুসলমানদের কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত কোন ঐশী গ্রন্থ নয় সেটার আরো একটি প্রমাণ এই পর্বে উপস্থাপন করবো।
প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে বিমোহিত হয়ে যেতো। রাতের কালো আকাশের বুকে ভেসে থাকা মিটি মিটি তারাগুলো আকাশের সুন্দর্য্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুন। ঝিকিমিকি তাঁরাগুলো যেন একেকটি মুক্তা। আর আকাশের বুকে ফুটে উঠা তাঁরাগুলো যেন টিপের মতো সাজ্বিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বযত্নে। আকাশের সুন্দর্য যেমন প্রাচীণকালের মানুষদেরকে মুগ্ধ করতো ঠিক সেভাবে আকাশের ঝিকিমিকি তাঁরাগুলোর রহস্য তাদের কাছে ছিল অজানা। তারা চিন্তা করে পেতো না আকাশের বুকে এতো সুন্দর মুক্তগুলো কিভাবে সাজানো হযেছে? তারা এসবের উত্তর জানতো না। তাদের জানার সাধ্যও ছিল না। কিন্তু তাদের অনুসন্ধিগ্ন মন তাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজে নিজে কল্পনা করে নিতো। তারা ভাবতো আকাশের তাঁরাগুলোকে কেউ একজন অতি যত্নে টিপের মতো করে লাগিয়ে দিয়েছে। আর ছোট ছোট তাঁরকাগুলো লাগানো হয়েছে ছাদের মতো আকাশের গায়ে। আকাশকে যেমন ছাদ বা তাবুর মতো মনে হয় ঠিক একই ভাবে তারকাগুলোকেও মুক্তার মতো মনে হয়। প্রাচীণ কালের মানুষ কল্পনা করে নিয়েছিলো তারকাগুলো এক একটি মুক্তার মতো। তারকাগুলো ছাদ বা তাবুর মতো আকাশের গায়ে লাগিয়ে আকাশের সুন্দর্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এমনটাই বিশ্বাস করতো প্রাচীণকালের মানুষগুলো।
প্রাচীণ আরবের মানুষগুলোও আকাশ এবং তারকাগুলো সম্পর্কে এমনটাই বিশ্বাস করতো। কুরআনের প্রবর্তক (বা রচয়িতা) মুহাম্মদের আকাশ ও তারকাগুলো সম্পর্কে ধারণাগুলোও প্রাচীণ মানুষের মতই ছিল। মুহাম্মদও মনে করতো আকাশ হলো ছাদের মতো বা তাবুর মতো কোন কিছু। আসলে আকাশকে খালি চোখে দেখলে সবার কাছেই ছাদ বা তাবুর মতই দেখায়। আর মুহাম্মদও প্রাচীণ মানুষদের মতই বিশ্বাস করতো তারকাগুলো এক একটি ঝিকিমিকি মুক্তার মতো কিছু একটা। মুহাম্মদ তারকাগুলো সম্পর্কে তার ধারণাগুলোকে কুরআনে বর্ণনা করেছে নানা ভাবে। কুরআনে আকাশ ও তারকা সম্পর্কিত আয়াতগুলো দেখলে বুঝা যায় আকাশ বা তারকাগুলো সম্পর্কে মুহাম্মদ কেমন ধারণা রাখতো। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে মুহাম্মদের চিন্তা ধারা বর্ণিত হয়েছে স্পষ্ট করে।
কুরআনে বর্ণিত মুহাম্মদের তারকা সম্পর্কিত ধারণাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখবো মুহাম্মদের বর্ণিত ধারণাগুলো কি সত্যি নাকি মুহাম্মদ তার প্রাচীণ অজ্ঞতাগুলোকেই কুরআনে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে?
কুরআনের সূরা আত্ব তারিক-এর ১-৩ নং আয়াতে বর্ণিত আছে,
“শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে যা প্রকাশ পায়;
তুমি কি জান রাত্রিতে যা প্রকাশ পায় তা কি ?
ওটা দীপ্তিমান নক্ষত্র!” (অনুবাদ – প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতগুলোতে তারকাগুলো সম্পর্কে মুহাম্মদের ধারণার প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে। কুরআনে আল্লাহ আকাশ ও রাতে প্রকাশিত তারকাগুলোর কসম কেটেছে। পক্ষান্তরে বলা যায় মুহাম্মদ তারকার কসম কাটছে। কারণ কসম কাটা মানুষের স্বভাব। কোন সৃষ্টিকর্তা কসম কাটবে তাও আবার তুচ্ছ তারকার সেটা মেনে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
এই আয়াতটিতে একটি বিষয় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে মুহাম্মদ তারকাগুলোকে চাঁদের মতো দীপ্তিমান বলেছে। অর্থাৎ মুহাম্মদ বুঝতে পেরেছিল যে তারকাগুলো আসলে আলো প্রদান করে। তবে কি এটি কোন বৈজ্ঞানিক দাবী ছিল? আসলে প্রাচীণ কাল থেকেই মানুষ দেখে এসেছে রাতের আকাশের তারকাগুলো দীপ্তিমান। সুতরাং এটা একটি সাধারণ মানুষের কথা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সূরা ফুরকানের ৬১ নং আয়াতে আছে,
“কত মহান তিনি যিনি আকাশে সৃষ্টি করেছেন বড় বড় তারকাপুঞ্জ এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র! (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতে আকাশে তারকা, সূর্য ও চন্দ্রের জন্য আল্লাহকে মহান বলা হয়েছে। সাথে এও বলা হয়েছে চন্দ্র আলো প্রদান করে তথা চাঁদের নিজের আলো রয়েছে।
উপরের আয়াত দুটো দিয়ে বুঝা গেলো মুহাম্মদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ আকাশে তারকাগুলোকে স্থাপন করেছে। কিন্তু কি উদ্দেশ্য আকাশে তারকাগুলোকে সৃষ্টি করার ? সূর্যকে না হয় দিনের আলোর জন্য এবং চাঁদকে না হয় রাতের আলোর জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে কিন্তু তারকাগুলোকে সৃষ্টি করার কারণটি কি ?
এর উত্তর স্বয়ং কুরআন লেখক কুরআনে দিয়ে দিয়েছে। সূরা ক্বাফ-এর ৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
“তারা কি তবে তাদের উপরকার আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে না – আমরা কেমন করে তা তৈরি করেছি এবং তাকে সুশোভিত করেছি, আর তাতে কোনো ফাটলও নেই ?” (অনুবাদ – ডঃ জহুরুল হক)
বুঝা গেলো আকাশকে সুশোভিত করার জন্য অর্থাৎ সাজানোর জন্য তারকাগুলোকে সৃষ্টি করা হযেছে। বড় কথা হলো যে আকাশে তারকাগুলোকে স্থাপন করা হয়েছে সেই আকাশের গায়ে একটি ফাটলও নেই। অবাক করা কান্ড, আকাশ যে একটি কঠিন পদার্থ দিয়ে তৈরি এবং তাতে একটি ফাটল পর্যন্ত নেই তা কুরআন না পড়লে আমরা জানতেই পারতাম না! সত্যি মুহাম্মদের আকাশ সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে এই আয়াতটিতে। মুহাম্মদও বিশ্বাস করতো আকাশ ঘরের ছাদের মতো এবং তাতে কোন ফাটল নেই।
তারকাগুলোকে সৃষ্টি করা হযেছে আকাশের সুন্দর্যের জন্য এই তথ্যটি আরো বর্ণিত রয়েছে সূরা হা মীম আস সাজদা-এর ১২ নং আয়াতে;
“(এই) একই সময়ে তিনি দুদিনের ভেতর এ (ধূম্রকুঞ্জ)-কে সাত আসমানে পরিণত করলেন এবং প্রতিটি আকাশে তার (উপযোগী) আদেশনামা পাঠালেন; পরিশেষে আমি নিকটবর্তী আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সাজিয়ে দিলাম এবং (তাকে শয়তান থেকে) সংরক্ষিত করে দিলাম, এসব (পরিকল্পনা) অবশ্যই পরাক্রমশালী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক (আগে থেকেই) সুবিন্যস্ত করে রাখা হয়েছিল।” (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
এই আয়াতে যেমন বলা হয়েছে তারকাগুলোকে আকাশকে সাজিয়ে দেবার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে শুধু তাই নয় বরং আরো বর্ণিত হয়েছে আকাশ আসলে সাতটা। মুসলমানদের আরবীয় সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ দাবী করছে আকাশ একটা নয় বরং আকাশ হলো সাতটা অর্থাৎ সাতটা কঠিন পদার্থের ছাদের মতো শক্ত আকাশ। এই সাতটা আকাশের মধ্যে তারকাগুলোকে সব চেয়ে নিচের আকাশে স্থাপন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় আকাশকে শয়তানদের থেকে সংরক্ষিত করেও দেওয়া হয়েছে। মোট কথা আকাশ হলো সাতটা যা আসলে বাস্তবতা বহির্ভূত ভ্রান্ত দাবী এবং তারকাগুলো সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হলো আকাশের সুন্দর্য্য বৃদ্ধি করা।
তাঁরাগুলোকে যে আকাশের সুন্দর্য্য রক্ষার্থেই সৃষ্টি করা হয়েছে তার প্রমাণ আরো একটি আয়াতে রয়েছে। কুরআনের সূরা আস-সাফফাত-এর ৬ নং আয়াতে আছে;
“নিঃসন্দেহে আমরা নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির শোভা দিয়ে সুশোভিত করেছি,” (অনুবাদ – ডঃ জহুরুল হক)
অর্থাৎ নিশ্চিত ভাবেই তারকাগুলো সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য আকাশের সুন্দর্য বৃদ্ধি করা। অর্থাৎ আকাশকে সুন্দর করে সাজাতেই তারকাগুলোকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তারকাগুলোকে কি শুধুমাত্র আকাশের সুন্দর্য বাড়াতেই সৃষ্টি করা হয়েছে, নাকি এদের অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে ? এই প্রশ্নের উত্তর আমরা পাবো সূরা নাহলের ১৬ নং আয়াতে;
“আর পথ নির্ণায়ক চিহ্নসমূহও; এবং ওরা নক্ষত্রের সাহায্যেও পথের নির্দেশ পায়।” (অনুবাদ – প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াত অনুযায়ী তারকাগুলোকে শুধু আকাশের সুন্দর্য বাড়াতেই সৃষ্টি করা হয়নি বরং তারাকাগুলো দেখে যেন মানুষ পথের দিক নির্ণয় করতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্যই তারকাগুলোকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
তারকাগুলোকে যে পথ নির্ধারক চিহ্ন হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় সূরা আন আম-এর ৯৭ নং আয়াতে;
“আর তিনিই তোমাদের জন্যে নক্ষত্ররাজিকে সৃষ্টি করেছেন যেন তোমরা এগুলোর সাহায্যে অন্ধকারে পথের সন্ধান পেতে পার, স্থলভাগেও এবং সমুদ্রেও; নিশ্চয়ই আমি প্রমাণসমূহ খুব বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি ঐসব লোকের জন্যে যারা জ্ঞান রাখে।” (অনুবাদ – প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে নক্ষত্রগুলোকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হলো এগুলোর সাহায্যে যাতে রাতের অন্ধকারে মানুষ পথের সন্ধান পায়। স্থলের এবং জলের সব জায়গাতেই যেন মানুষ অন্ধকারে পথের দিক নির্দেশ পায় সেজন্যই তারকাগুলোকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অর্থাৎ তারকাগুলোকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হলো তারকাগুলো আকাশে স্থাপন করে আকাশের সুন্দর্য বৃদ্ধি করা এবং এগুলোর সাহায্যে যাতে মানুষ পথের সন্ধান পায় সেই ব্যবস্থা করা।
এখন প্রশ্ন হলো, তারকাগুলো সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য কি শুধু আকাশের সুন্দর্য বৃদ্ধি করা এবং পথ নির্দেশ পাওয়াই; নাকি এগুলো সৃষ্টি করার অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে ? এর উত্তর রয়েছে সূরা আল মুলক-এর ৫ নং আয়াতে,
“নিকটবর্তী আকাশটিকে (তুমি দেখো, তাকে কিভাবে) প্রদীপমালা দিয়ে আমি সাজিয়ে রেখেছি, (উর্ধ্বলোকের দিকে গমনকারী) শয়তানদের তাড়িয়ে বেড়ানোর জন্যে এ (প্রদীপগুলো)-কে আমি (ক্ষেপনাস্ত্র হিসেবে) সংস্থাপন করে রেখেছি, (চুড়ান্ত বিচারের দিন) এদের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডলীর ভয়াবহ শাস্তির ব্যবস্থাও আমি (যথাযথভাবে) প্রস্তুত করে রেখেছি।” (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
এই আয়াত অনুযায়ী আমরা জানতে পারছি, তারকাগুলোকে শুধু আকাশের সুন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়নি বরং এগুলো সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হলো শয়তানদেরকে তাড়িয়ে বেড়ানো এবং এগুলোকে শয়তানদের তাড়াতে ক্ষেপনাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে। অর্থাৎ তারকাগুলো হলো এক একটি আগুনের গোলা। এই আগুনের গোলাগুলো দিয়ে শয়তানদের তাড়িয়ে বেড়ানো হয় এবং ক্ষেপনাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
তারকাগুলোকে আগুনের গোলা হিসেবে শয়তানদের শাস্তি দেবার জন্য বানানো হয়েছে এটার প্রমাণ পাওয়া যায় কুরআনের আরেকটি আয়াতে। কুরআনের সূরা হিজর-এর ১৬-১৮ নং আয়াতে বর্ণিত আছে,
“আকাশে আমি গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং ওকে করেছি সুশোভিত দর্শকদের জন্যে।
প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান হতে আমি ওকে রক্ষা করে থাকি।
আর কেউ চুরি করে সংবাদ শুনতে চাইলে ওর পশ্চাদ্ধাবন করে প্রদীপ্ত শিখা।” (অনুবাদ-প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতে বলা হয়েছে তারকাগুলোকে আকাশকে সুশোভিত করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এগুলোকে শয়তানদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বা চুরি করে শয়তানরা কোন কথা শুনতে চাইলেই তারকাগুলো আগুনের গোলা হয়ে তাদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়।
এই আয়াতটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত আকাশ ও তারকাগুলো সম্পর্কে মুহাম্মদের ধারণা প্রমাণ করার জন্য। মুহাম্মদ মনে করতো আকাশ হলো ঘরের ছাদের মতো শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরি। এবং এই আকাশের গায়ে আগুনের গোলার মতো তারকাগুলোকে স্থাপন করা হয়েছে। যখন কোন শয়তান ছাদ আকৃতির আকাশের উপরের কোন খবর শুনার চেষ্টা করে তখন এই তারকাগুলোকে নিক্ষেপ করা হয়। এই আগুনের গোলা তারকাগুলো শয়তানকে তাড়িয়ে বেড়ায় এবং তাদের হাত থেকে আকাশের উপরের বিষয়গুলোকে রক্ষা করে। শয়তানরা শক্ত কঠিন আকাশের উপরের খবর শুনতে পারে না। কিন্তু তারা আকাশের উপরের খবরগুলো শুনার জন্য চেষ্টা করে যেতে থাকে। যখনই তারা কোন খবর শোনার চেষ্টা করে সাথে সাথে তারকাগুলো তাদের পিছনে ধাওয়া করে আগুনের গোলার মতো ক্ষেপনাস্ত্র হিসেবে।
মুহাম্মদের আকাশ, তারকা সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হয় কুরআনের সুরা সাফফাতের ৬ থেকে ১০ নং আয়াতগুলো পড়লে।
“”আমি পৃথিবীর আকাশকে নক্ষত্ররাজির শোভা দ্বারা সুশোভিত করেছি । এবং রক্ষা করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান হতে । ফলে, তারা ঊর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং তাদের প্রতি (জলন্ত তারকা) নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক হতে, বিতাড়নের জন্যে এবং তাদের জন্যে আছে অবিরাম শাস্তি । তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তাদের পশ্চাদ্বাবন করে ।” (অনুবাদ-প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতটিতে স্পষ্ট করেই বুঝানো হচ্ছে আকাশ হলো কঠিন পদার্থের তৈরি একটি ছাদ বিশেষ। এজন্যই আকাশের উপরের কোন কিছু শুনা যায় না। শয়তান আকাশের উপরের কথা বার্তা শুনার জন্য প্রায়ই চেষ্টা চালায়। কিন্তু যখন তারা কিছু শুনতে যায় তখন আগুনের গোলার মতো তারকাগুলো তাদেরকে তাড়া করে সেখান থেকে বের করে দেবার জন্য। এমনিতেই শয়তান কিছু শুনার সুযোগ পায় না কিন্তু কখনও যদি চুরি করে কিছু শুনে ফেলে সাথে সাথে তাদেরকে পিছু ধাওয়া করে জ্বলত্ব উল্কাপিন্ড তথা খসে পড়ে তারকা।
উপরের আয়াতগুলো থেকে মুহাম্মদের আকাশ ও তারকাপুঞ্জ সম্পর্কে ধ্যাণ ধারণা স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে। আসলে মুহাম্মদ আকাশ ও তারকাগুলো সম্পর্কে প্রাচীণকালের মানুষের ভ্রান্ত ধারণাগুলোকেই সত্য বলে মনে করতো। আর তাই সে এসব ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে সত্য মনে করে কুরআনে লিখে দিয়েছে। যা প্রমাণ করে কুরআন আসলে মুহাম্মদের নিজের রচিত গ্রন্থ।
আকাশে মাঝে মাঝে দেখা যায় তারকার মতো আগুনের গোলা ছুটে যায়। দেখে মনে হয় তাঁরাগুলো যেন মাঝে মাঝে খসে পড়ে যায়! এটা মুহাম্মদও দেখেছিল জীবনে অসংখ্যবার। আর খসে পড়া তাঁরাগুলোকে দেখে মুহাম্মদ ভেবেছে এই খসে পড়া তাঁরাগুলো বুঝি আকাশে মিটিমিটি করে জ্বলা তারকাগুলোই। আসলে তারকাগুলো যে আমাদের সূর্যের মতোই একেকটি বিশাল আকৃতির নক্ষত্র এই তথ্যটি মুহাম্মদের মতো এক প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষের জানার কথা নয়। অথচ মুহাম্মদের অনেক আগেই গ্রীক দার্শনিকদের অনেকেই জানতে পেরেছিল যে তারকাগুলো আসলে বিশাল আকৃতির এক একটি সূর্য। কিন্তু মুহাম্মদ আরবের এক সাধারণ অজ্ঞ মানুষ হওয়ায় এসব তথ্য জানতো না। তাই সে উল্কা পিন্ড থেকে বিচ্ছুরিত আলো দেখে সেগুলোকে তারকা ভেবেছে। আর মনে করেছে তারকাগুলো ছোট ছোট মুক্তার মতো আগুনের গোলা। মুক্তার মতো এই আগুনের গোলাগুলোকে আকাশের সুন্দর্য রক্ষার্থে আকাশে স্থাপন করা হয়েছে। যা দেখে মানুষ পথের দিক নির্দেশনা পায়। এসব মুক্তার মতো আগুনের গোলাগুলো শয়তানদের তাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয় এবং শয়তানরা যখন আকাশের উপরে ফেরেশতাদের বলা কথা চুরি করে শুনতে যায় তখন এই আগুনের গোলাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়ে এবং শয়তানদের তাড়া করে বেড়ায়। এসময়ই মানুষ খসে পড়া তাঁরাগুলো দেখতে পায়।
অথচ মুহাম্মদ জানতো না যে খসে পড়া তারকাগুলো প্রকৃতপক্ষে কোন তারকা নয়। আর তারকাগুলোর আকৃতি এতো বিশাল যে এগুলো দিয়ে শয়তানদের পিছু ধাওয়া করার কথা কল্পনা করাটাও হাস্যকর।
আকাশ কোন কঠিন পদার্থের তৈরি ছাদ নয়। কুরআনে যেভাবে আকাশের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যে কেউ আকাশের সীমানার বাইরে যেতে পারে না, ছাদের মতো আকাশের উপরের সংবাদ শুনার ধারণা করা, এবং শয়তানদের পিছনে তারকাগুলোর পিছু ধাওয়া করা, এসবগুলোই অজ্ঞ মুহাম্মদের ভ্রান্ত ধারণা। এর সাথে বাস্তবতার কোনই মিল নেই। শয়তান এবং ফেরেশতা বলতে বাস্তব জগতে যেমন কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই ঠিক একই ভাবে শয়তান ছাদের মতো আকাশের উপরের কোন কথা চুরি করে শুনার ধারণাগুলো আসলে রুপকথার গল্পকথার মতো। এর অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই। আসলে মুহাম্মদ এসব ফেরেশতা ও শয়তানের ভ্রান্ত বিশ্বাস গুলো মানুষের মুখে শুনে শুনে বিশ্বাস করেছে। তাই তার ধারণা হয়েছে শয়তান কঠিন আকাশের উপরের খবরগুলো যখন শুনার চেষ্টা করে তখনই তারকাগুলো তাদের পিছু ধাওয়া করে। মোট কথা মুহাম্মদ যেসব ভ্রান্ত ধারণা সেসময়ের মানুষের কাছ থেকে পেয়েছে এবং আকাশ ও তারকাগুলোকে যেভাবে প্রত্যক্ষ করেছে ঠিক সেভাবেই সে আকাশ ও তারকার ধারণাগুলো তৈরি করেছে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে। আর সেসব ভ্রান্ত বিশ্বাসগুলোই কুরআনে লিখে দিয়েছে।
এর প্রমান পাওয়া যায় যখন মুহাম্মদ বর্ণিত কুরআনে আকাশ, তারকা এবং শয়তানের এমন উদ্ভট গল্প কথার উল্লেখ থাকে। তারকাগুলো খসে পড়া তাঁরা নয়। আকাশ শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরি ছাদ নয় তাই এর কোন ফাটল থাকারও কথা নয়। শয়তান বলে কেউ নেই তাই এর পিছনে আগুনের গোলার পিছু ধাওয়ার ধারণাটি পুরোপুরিই অবাস্তব এবং হাস্যকর। এসব ভ্রান্ত ধারণাগুলোর অস্তিত্ব থাকায় প্রমাণ হয় কুরআন কোন অতিক্ষমতাবাণ সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে না। বরং কুরআন মুহাম্মদের মতো প্রাচীণ আরবীয় অজ্ঞ মানুষের লেখা প্রাচীণ ধ্যান ধারণার গ্রন্থ, এটাই প্রমাণিত হয়।
মুহাম্মদের মেরাজের গল্পে আমরা দেখতে পাই আকাশের সীমানা পার হবার জন্য প্রত্যেক আকাশে প্রহরী ফেরেশতা থাকে। তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আকাশের উপরে উঠতে হয়। কুরআনেও বলা হয়েছে কেউ আকাশের বাইরে যেতে পারবে না অনুমতি ব্যতীত (সুরা আর রাহমান- আয়াত ৩৩)। এভাবে কুরআনের শয়তানও আকাশের উপরের কোন কথা শুনতে পারে না। কারন শুনতে গেলেই তারকাগুলো আগুনের গোলোর মতো নিক্ষিপ্ত হয় শয়তানদের তাড়িয়ে দেবার জন্য।
এসব ভ্রান্ত ধারণাগুরো মুহাম্মদ মনে প্রাণে বিশ্বাস করতো বলেই কুরআনে এসব ভ্রান্ত ধারণাগুলো লিখে দিয়েছে। যা প্রমান করে কুরআন আসলে মুহাম্মদের নিজের লেখা বই।
আকাশ ও নক্ষত্র সম্পর্কিত কুরআনের ভ্রান্ত ধারণাগুলো যেমন প্রমাণ দেয় কুরআন আল্লাহ নামের কোন সৃষ্টিকর্তার গ্রন্থ নয় ঠিক তেমনি নক্ষত্রে সম্পর্কিত আরো কিছু আয়াত আছে যা প্রমাণ দেয় কুরআন আসলে মুহাম্মদের লেখা গ্রন্থ।
কুরআনের সূরা আন নাহল-এর ১২ নং আয়াতে আছে;
“আর তিনি তোমাদের জন্য সেবারত করেছেন রাত ও দিনকে, আর সূর্য ও চন্দ্রকে। আর গ্রহনক্ষত্রও অধীন হয়েছে তাঁর বিধানে। নিঃসন্দেহ এতে নিশ্চয়ই নিদর্শন রয়েছে সেই লোকদের জন্য যারা জ্ঞানবুদ্ধি রাখে।” (অনুবাদ – ডঃ জহুরুল হক)
এই আয়াত অনুযায়ী সূর্য, চন্দ্রের মতো নক্ষত্রের জন্যও কিছু বিধান বা নিয়ম কানুন রেখেছে। কি সেই বিধান সেটা জানতে পারা যায় কুরআনের অন্য কিছু আয়াতে।
কুরআনের সূরা নাজমের ১ নং আয়াতে বর্ণিত আছে;
“নক্ষত্রের শপথ যখন তা ডুবে যায়,” (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
এই আয়াত থেকে আমরা জানতে পারছি তারকাগুলোও সূর্য ও চন্দ্রের মতো ডুবে যায় বা অস্ত যায়। অর্থাৎ কুরআন বলছে সূর্য ও চাঁদ যেভাবে প্রতিদিন উদিত হয় এবং অস্ত যায় ঠিক একই ভাবে তারকাগুলোও অস্ত যায়।
এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় কুরআনের সূরা আত্ব-তূর-এর ৪৯ নং আয়াতে;
“রাতের একাংশেও তুমি তাঁর তাসবীহ পাঠ করো, আবার (রাতের শেষে) তারাগুলো অস্তমিত হবার পরও (তার মাহাত্ম্য ঘোষণা করো)। (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
এই আয়াতটি স্পষ্ট বলছে রাতের শেষে তারকাগুলো অস্ত যায়। সূর্য যেমন সন্ধায় অস্ত যায় এবং চাঁদ যেমন সকালে অস্ত যায় ঠিক একই ভাবে তারকাগুলোও সকাল বেলায় বা ভোর বেলায় অস্ত যায়।
একই কথা আছে কুরআনের সূরা ওয়াকি’আহ্ (ওয়াক্বিয়া), আয়াত ৭৫ নাম্বারে;
“আমি শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের,” (অনুবাদ-প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
অর্থাৎ তারকাদের একটি অস্তাচল আছে; যেভাবে সূর্য ও চন্দ্রের অস্তাচলের কথা কুরআন দাবী করেছে। কুরআনের এই আয়াত অনুযায়ী তারকাদেরও সুর্য় ও চন্দ্রের মতো একটি অস্তাচল রয়েছে এবং তারকাগুলো সূর্য চাঁদের মতোই অস্ত যায়।
আমরা বর্তমানে জানি যে নক্ষত্রগুলো একেকটি সূর্যের মত এবং সূর্যের চেয়েও বড় আকৃতির সূর্য। আমাদের সূর্যটিও একটি নক্ষত্র। কিন্তু কুরআন দাবী করেছে তারকাগুলো হলো আকাশের সুন্দর্য বাড়ানোর জন্য ও পথের নির্দেশ পাবার জন্য স্থাপিত মুক্তার মতো আলোর গোলা। যা আকাশে মিটিমিটি জ্বলতে থাকে এবং শয়তানদের পিছনে ধাওয়া করে মাঝে মাঝে। অর্থাৎ আকাশের তারাগুলোও যে এক একটি বিশাল আকৃতির সূর্যের মতো নক্ষত্র এটি কুরআন লেখক জানতো না। এজন্যই এসব অর্থহীন ভ্রান্ত ধারণা দিয়ে কুরআনকে ভরিয়ে তুলেছে। যদি কুরআন লেখক জানতো যে তারকাগুলো কোন আগুনের গোলা নয় এবং এগুলোকে সুন্দর্য বাড়ানোর জন্য বা পথের নির্দেশক বানানো হয়নি তাহলে এসব অর্থহীন ভ্রান্ত ধারণার কথা কুরআনে লিখে দিতো না। নক্ষত্রগুলো কখনও অস্ত যায় না। সূর্যের আলোর তীব্রতায় নক্ষত্রগুলোকে শুধুমাত্র দেখা যায় না। এসব বৈজ্ঞানিক তত্বকথা মুহাম্মদের মতো প্রাচীণ মানুষের জানা সম্ভব ছিল না। এজন্যই সে তারকাগুলো সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা রাখতো; যা সেসময়ের সাধারণ অজ্ঞ মানুষগুলো বিশ্বাস করতো; সেগুলো মুহাম্মদও সত্য বলে বিশ্বাস করতো্। এজন্যই সে এসব ভ্রান্ত ধারণা কুরআনে লিখে দিয়েছে। যা প্রমাণ হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছে যে কুরআন আসলে অতিক্ষমতাবাণ কোন সৃষ্টিকর্তা রচিত গ্রন্থ নয় বরং কুরআন হলো মুহাম্মদের নিজের রচিত একটি প্রাচীণ ভ্রান্তিপূর্ণ গ্রন্থ। তাই সে নক্ষত্রের অস্ত যাবার কথা কুরআনে উল্লেখ করেছে যেভাবে সে নক্ষত্রকে আগুনের গোলা মনে করেছে সেরকম ভাবে।
মুহাম্মদ যে উল্কাপিন্ডকে মনে করতো তারকা বা নক্ষত্র তার প্রমান পাওয়া যায় নিচের আয়াতে।
সূরা আত্ তাকভীর, আয়াত ১৫-১৬,
“শপথ সেসব তারকাপুঞ্জের যা (চলতে চলতে) গা ঢাকা দেয়,
(আবার) যা (মাঝে মাঝে) অদৃশ্য হয়ে যায়, (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
এই আয়াতে দেখা যাচ্ছে তারকাকে চলতে চলতে গা ঢাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা মাঝে মাঝে অদৃশ্য হয়ে যায়। অর্থাৎ কুরআন লেখক উল্কাপিন্ডকে তারকা ভাবতো।
আমরা জানি তারকা কখনই আলো দেওয়া বন্ধ করে না। কুরআন যেভাবে দাবী করেছে কিছু কিছু তারকা চলতে থাকে এবং অদৃশ্য হয়ে যায় এরকম কোন তারকার অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই। বরং কুরআন লেখক উল্কাপিন্ডকে তারকা ভেবেছে। কারণ উল্কাপিন্ডই একবার জ্বলে এবং একবার অদৃশ্য হয়ে যায়। এমনকি উল্কাপিন্ডই চলতে থাকে। কোন তারকাই উল্কাপিন্ডের মতো চলতে থাকে না এবং মাঝে মাঝে অদৃশ্যও হয় না। স্পষ্টতই কুরআন লেখক জানতো না যে উল্কাপিন্ড আসলে তারকা নয়। অর্থাৎ স্পষ্ট ভাবেই এই আয়াতটি প্রমান দিচ্ছে কুরআন কোন সৃষ্টিকর্তার বাণী নয়।
কুরআন যে কোন সৃষ্টিকর্তার বানী নয় তার আরো কিছু প্রমাণ-
কুরআনের সূরা আরাফের ৫৪ নং আয়াতে আছে;
“… সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজী সবই তাঁর হুকুমের অনুগত, …” (অনুবাদ – প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্রের মতো তারকাগুলোও আল্লাহর হুকুমে চলে।
কুরআনের সূরা ইনফিতার-এর ১ ও ২ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
“যখন আকাশ ফেটে যাবে,
যখন তারকারাজী বিক্ষিপ্তভাবে ঝরে পড়বে, ” (অনুবাদ-প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবর রহমান)
এই আয়াতে কিয়ামতের কথা বলা হয়েছে। যখন কেয়ামত আসবে তখন তারকাগুলো আকাশ থেকে ঝরে পরবে। অর্থাৎ কুরআন লেখক ভেবেছে তারকাগুলো ছাদের মতো আকাশের গায়ে টিপের মতো স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু যেদিন কেয়ামত আসবে সেদিন আকাশ ভেঙ্গে যাবে এবং এরফলে তারকাগুলো ঝরে পড়বে। আসলে কুরআন লেখকের কোন ধারণাই ছিল না যে বিশাল আকৃতির নক্ষত্রগুলোর পক্ষে পৃথিবীর উপর ঝরে পড়া কখনই সম্ভব নয়। আমরা যেমন ঘরের ছাদে কাগজের তারকা লাগিয়ে দেই এবং সেগুলো ঝরে পড়ে ঠিক একই ভাবে কিয়ামতের দিন তারকাগুলোও আকাশের গা থেকে ঝরে পড়বে। কুরআন লেখক যে কত বড় অজ্ঞ একজন ব্যক্তি এটা এই আয়াতটি দ্বারাই স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে। কুরআনের লেখকের কোন ধারণাই ছিল না তারকাগুলো সম্পর্কে।
কুরআনের সূরা আল মোরসালাত-এর ৮-৯ নং আয়াতে আছে;
“যখন আকাশের তারাগুলোকে জ্যোতিহীন করে দেয়া হবে,
যখন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে,” (অনুবাদ – হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
অর্থাৎ কেয়ামতের দিন আকাশ ভেঙ্গে যাবে এবং তখন তারকাগুলো নিভে যাবে।
কুরআন লেখক তারকাগুলো সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখতো না। পৃথিবী ও আমাদের সূর্য যদি ধ্বংসও হয় তবুও সমস্ত তারকাগুলো ধ্বংস হবে না। কারণ তারকাগুলো একেকটি সূর্যের মতো নক্ষত্র। বিশ্বজগতের অনেক তারকাই ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে কিন্তু পৃথিবী ধ্বংশ হয়ে যায়নি। আবার সূর্য ও পৃথিবী যদি ধ্বংস হয়েও যায় তখনও বাকী তারকাগুলো অক্ষত থাকবে এবং আলো দিতে থাকবে। কারণ সেসমস্ত তারকাগুলো পৃথিবীর ধ্বংসের সাথে সম্পর্কিত নয়।
কুরআন লেখক এসব বিষয় সম্পর্কে ছিল সম্পূর্ণই অজ্ঞ। তার তারকা সম্পর্কিত ধারণাগুলো ছিল প্রাচীণ আরবের সাধারণ মানুষের ভ্রান্ত ধারণার মতো। কুরআন লেখকও ততকালীন আরবের অজ্ঞ মানুষদের মতোই বিশ্বাস করতো আকাশ হলো ছাদ এবং তারকাগুলোকে তার গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে আকাশের সুন্দর্যের জন্য এবং মানুষ যাতে অন্ধকারে পথের দিক নির্দেশ পায় সেজন্য। কুরআন লেখক এসব ভ্রান্ত প্রাচীণ ধ্যান ধারণা রাখতো বলেই কুরআনে এমন অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তব ধারণাগুলো লিখে দিয়েছে।
কুরআন লেখক আকাশ ও তারকাগুলো সম্পর্কে কোন বাস্তব ধারণাই রাখতো না বলে সে জানতো না যে তারকাগুলো একেকটি সূর্য বা সূর্যের মতো নক্ষত্র। তাই সে দাবী করেছে নক্ষত্রগুলো আকাশের সুন্দর্য বৃদ্ধি এবং পথ নির্দেশের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এবং নক্ষত্রগুলোকে আগুনের গোলার মতো কিছু বলে দাবী করেছে কুরআন লেখক যা বিজ্ঞান ও বাস্তবতা বিরোধী ধারণা। কারণ নক্ষত্রগুলো কোন আগুনের গোলা নয় যে সেগুলো দিয়ে শয়তানকে তাড়া করা যায়। আসলে কুরআন লেখক ছিল প্রাচীণ ভ্রান্ত ধারণার একজন অজ্ঞ মানুষ। এজন্য সে সেসময়ের ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে সত্য বলে বিশ্বাস করে কুরআনে লিখে দিয়েছিল। যদি কুরআন লেখক জানতোই যে নক্ষত্রগুলো একেকটি সূর্যের চেয়েও বড় কিছু তবে এসব ভ্রান্ত ধারণার কথাগুলো কুরআনে লিখে দিতো না। একটি বিশাল আকৃতির নক্ষত্র একটি ক্ষুদ্র আকৃতির শয়তানের পিছনে ধাওয়া করছে তাও আবার পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের কাছে সেটি কল্পনা করতেই হাস্যকম মনে হয়। অথচ কুরআনের লেখক এরকম একটি হাসকর কথা বলে নিজেকে সর্বজ্ঞানী বলে দাবী করেছে।
নক্ষত্রগুলো কখনও নিভে যায় না বা অস্ত যায় না যেমনটা কুরআন লেখক দাবী করেছে। বরং সব সময়ই এগুলো একই রকমে আকাশে অবস্থান করে। কিন্তু কুরআন লেখক ভেবেছে সে যেভাবে সূর্য ও চন্দ্রকে প্রতিদিন উদিত হতে দেখে এবং অস্ত যেতে দেখে সেভাবেই বুঝি সূর্য ও চন্দ্র প্রতিদিন অস্ত যায়। এবং সে সেটা দেখে ধারণা করেছে সূর্য ও চন্দ্রের মতো তারকাগুলোই বুঝি অস্ত যায়। প্রাচীণ আরবের মরুভূমির বুকে দাড়িয়ে একজন মানুষের সূর্য ও চন্দ্রের অস্ত যাওয়া পর্যবেক্ষন করা এবং তা থেকে নক্ষত্রগুলোর অস্ত যাবার ধারণা করাটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। ফলে কুরআনের লেখকও এরকমটিই ধারণা করেছিল এবং সেটাই কুরআনে লিখে দিয়েছিল। ফলে এসব প্রাচীণ ধ্যাণ ধারণার তারকা সম্পর্কিত বাণীগুলো কুরআনে লিখিত থাকায় এটা নিশ্চিত ভাবেই প্রমাণিত হয় যে কুরআন একজন প্রাচীণ আরবের মরুভূমিতে দাড়িয়ে থাকা মানুষের লেখা বই। কুরআনে এসব ভ্রান্তিকর ধারণা লেখা থাকায় প্রমাণিত হয় কুরআন কোন অতিজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তার লেখা গ্রন্থ নয়।
যেহেতু কুরআনের প্রতিটি বাণীই মুহাম্মদের মুখ নিঃসৃত বাণী তাই প্রমানিত হয় কুরআন হলো মুহাম্মদ নামের এক প্রাচীণ আরবীয় অজ্ঞ মানুষের রচিত গ্রন্থ।
অর্থাৎ কুরআন আল্লাহর বাণী নয় বরং কুরআন মুহাম্মদের বাণী। (প্রমানিত)
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ভূলে ভরা প্রাচীণ ভ্রান্ত ধারণার গ্রন্থ কুরআনের ভূলগুলো দেখে যখন মানুষ বুঝতে পেরেছে কুরআন হলো মুহাম্মদের নিজের লেখা বই তখন একদল ধর্মব্যবসায়ী দিন রাত পরিশ্রম করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাতে প্রাণাতিপাত করে ফেলছে। কিন্তু তাতে কুরআন বিজ্ঞানময় গ্রন্থ হয়ে উঠছে না। কুরআনকে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাতে এমন কোন অপপদ্ধতি নেই যা তারা অবলম্বন করছে না। তারা কুরআনের ভূলগুলোকে সংশোধনের জন্য কুরআনে ব্যবহৃত শব্দের অর্থকে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন নতুন অর্থ করার মাধ্যমে কুরআনের ভূলকে সংশোধন করছে এবং একই সাথে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বলে দাবী করছে। কিন্তু এসব মুসলমানরা বুঝতে চাইছে না যে, ভূলে ভরা কুরআনের অর্থকে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে কুরআনকে সংশোধন করার পরে সেটিকে বিজ্ঞানময় বানানোতে কুরআনের কোন কৃতিত্ব থাকছে না। বরং যারা কুরআনে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থ পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাচ্ছে তারাই হলো নতুন অর্থের কুরআনের বিজ্ঞানময় বানানোর জন্য দায়ী। মুহাম্মদের লিখিত কুরআনের মধ্যে ভূল ভ্রান্তি ছিল বলেই কুরআনে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থ বদলে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে কুরআনকে সংশোধন করতে হয় এবং সাথে সাথে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাতে হয়। যদি কুরআন সত্যিই কোন সৃষ্টিকর্তার বাণী হতো তবে কুরআনের অর্থকে বদলে দিয়ে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাতে হতো না। (তাও আবার কুরআনের নতুন অর্থ বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই করা হয়।) তখন পূর্বের কুরআনের অর্থকে অপরিবর্তনীয় রেখেও কুরআন বিজ্ঞানময় গ্রন্থ হতো। কিন্তু যেহেতু কুরআন কোন সৃষ্টিকর্তা প্রবর্তিত গ্রন্থ নয় তাই এর ভূলগুলোকে সংশোধন করে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাতে এর অর্থকে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে পরিবর্তন করতে হয়।
বরং কুরআনের অর্থকে বদলে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে কুরআনের ভূল সংশোধন ও বিজ্ঞানময় করার মহোৎসবগুলো এটাই প্রমাণ করে যে কুরআন হলো মুহাম্মদের মতো প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষের লেখা বই। এজন্যই মুহাম্মদের লেখা কুরআনে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থকে বদলে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করা হয় এবং এভাবে কুরআনের ভূলগুলোকে সংশোধনের মাধ্যমে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বলে দাবী করা হয়।
এতে ভূলে ভরা কুরআন বিজ্ঞানময় হয়ে উঠে না বরং মুসলমানদের মিথ্যাচার, প্রতারনা ও ভন্ডামী প্রমাণিত হয়।